মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের তরুণরা বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সুযোগ বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবাসমূহ আরও সহজে পেতে চান। একই সাথে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান তারা। 

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শহরের সাইফুর রহমান অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত “আমিও জিততে চাই ইয়ুথ ফেয়ার” এ অংশগ্রহণকারী জেলার একাধিক তরুণরা তাদের এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন।

ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিলেট এর সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার মোঃ নাইমুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন জেলা আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া তরুণরা বলেন, একদিকে চাকুরীর সুযোগ যেমন কম অপরদিকে উদ্যোক্তা হতেও রয়েছে নানা জটিল সব প্রতিবন্ধকতা। তরুণদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সহজ ঋণসুবিধার দাবি জানান তারা। এছাড়া সরকারের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবার মানের উন্নতি, নাগরিকদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেয়া, শহরকে নারী ও শিশু বান্ধব গড়ে তোলা, সুবিধাবঞ্ছিতদের জন্য উন্নততর সেবার নিশ্চয়তা, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য শহরে একটি বিশেষ মার্কেটের ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন দাবি উঠে আসে তরুণদের কাছ থেকে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী তরুণরা বলেন, দেশে বেশিরভাগ তরুণই রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন এবং তারা রাজনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী নন, কারণ তারা মনে করেন তাদের মতামত সেভাবে গুরুত্ব পায় না। দেশের উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, তরুণদের প্রত্যাশাগুলোকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য নীতি নির্ধারক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অংশগ্রহণকারী তরুণরা আহ্বান জানিয়ে এসব প্রত্যাশা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণ অংশ নেন। এসময় নাগরিক ইস্যু নিয়ে বির্তক, কুইজ ও ভিডিও বার্তা তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

ইয়ুথ ফেয়ারের অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘আমিও জিততে চাই আন্তঃকলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতা’য় অংশগ্রহণ করে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসা, ইম্পেরিয়াল কলেজ, বড়লেখা সরকারি ডিগ্রী কলেজ এবং সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজ। বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি সংসদীয় পদ্ধতি অনুসারে আয়োজন করা হয় । ওই প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকরা নাগরিক ইস্যুর সমাধান বিষয়ে যুক্তি-পাল্টাযুক্তি তুলে ধরেন। মেলায় ভিডিও বার্তা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তরুণদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়, এককভাবে ক্যামেরার সামনে দু-মিনিটে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে তাদের মধ্যে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নাগরিক সমস্যা তুলে ধরে ভোরের আলো নাট্যদল ‘জুলেখার জীবন’ নামে একটি নাটক মঞ্চায়ন করেন।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪)