তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : আগামী ৯ মার্চ  গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর নির্বাচন চাইছেন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাবেক চেয়াারম্যান বিভা মন্ডল, নতুন মুখ বিপ্লব মজুমদার ও শেফালী রানী হাওলাদার শিমু  প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের এই ঘাঁটিতে কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জলিরপাড় ইউনিয়ন এখন প্রচার প্রচার প্রচারনায় মুখরিত। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো ইউনিয়ন। প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন।

বিভা মন্ডল মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। ২০২১ সালে জলিরপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র বৈরাগীর মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বিভা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ৬ মাসের জন্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তারপর ইউপি নির্বাচনে বিভা মন্ডল আওয়ামী লীগের মানোয়ন পান। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মিহির কান্তি রায়ের কাছে সামান্য ভোটে হেরে যান। বিভার পরাজয়ে জলিরপাড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বিপ্লব মজুমদারকে বহিস্কার করা হয়। ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ এটিকে ভালভাবে নেয়নি। বিপ্লব বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও জলিরপাড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত নিত্য গোপাল মজুমদারের ছেলে। ইউনিয়ন জুড়ে তার গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে।

চেয়ারম্যান মিহির কান্তি রায় ২০২৩ সালের ৪ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাই জলিরপাড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে বিভা ও প্রায়াত মিহির চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেফালী প্রতিদ্বন্দিতা করবেন বলে গত ৮ মাস ধরে শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু বিপ্লব শেষ মুহুর্তে হঠাৎ করে প্রার্থী হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। রয়েছেন লাইম লাইটে। তবে নির্বাচনে বিভা ও বিপ্লবের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়েছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

বিভা মন্ডল বলেন, আমি ইউনিয়নবাসীকে স্মার্ট ইউনিয়ন উপহার দেব। উপ নির্বাচনে নিরর্বাচিত হয়ে আমি এটি শুরু করেছিলাম। এবার নির্বাচিত হয়ে উন্নয়ন ও আগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে নারী অধিকার এবং ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করব। ইউনিয়নবাসীর সাথে আমি সব সময় আছি। আমার সাথে আওয়ামী লীগের সব নেতা কর্মীরা রয়েছেন। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর ভোটে আওয়ামী লীগের এ ঘাঁটিতে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।

বিপ্লব মজুমদার বলেন, জনগণই আমরা শক্তি। আমি তাদের মনোনীত প্রার্থী । আবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবরে আমেজে ভোট চাই। এটি হলে তারা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে। আমি চেয়ারম্যান হতে পারলে জলিরপাড়কে মাদক, সন্ত্রাস মুক্ত আধুনিক ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলব।

চেয়ারম্যান প্রার্থী শেফালী রানী হাওলাদার শিমু বলেন, আমার স্বামী মিহির কান্তি রায়কে এই ইউনিয়নের মানুষ ভোট দিয়ে ২ বার চেয়ারম্যান করেছে। তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। আমরা স্বামী প্রায় ৮ মাস আগে মারা গেছেন। আমি ইউনিয়নবাসীর কাছে যাচ্ছি। তাদের সহানুভূতি পাচ্ছি। আবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে আমি আমার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

ভোটার জগবন্ধু দাস, সুশীল শাখারী, লিটন খান, সুখ শাখারী বলেন, আমরা উৎসব মুখর নির্বাচন চাই। যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করব। তিনি বিপদে আপদে আমাদের পাশে থাকবেন। নিরাপত্তা দেবেন। এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

রির্টানিং কর্মকর্তা ও মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জুয়েল আহম্মেদ বলেছেন, প্রার্থীরা নিরপেক্ষা নির্বাচন প্রত্যাশা করেছেন। তাই ৯ মার্চ অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।

জলিরপাড় ইউনিয়নের মোট ভোটার ১৫ হাজার ৮১৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৭ হাজার ৯৩৭ জন। আর ৭ হাজার ৮৭৭ জন পুরুষ ভোটার। ৯ মার্চ ভোটারারা ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।

(টিবি/এসপি/মার্চ ০১, ২০২৪)