গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বাবা-মার স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন বর। আবার বিয়ে শেষে বাবা, মা ও স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে নিজ বাড়িতে গেলেন। এ হেলিকপ্টারের উঠানামা দেখতে স্থানীয় জনগণের ছিল ব্যাপক ভীড়। বরযাত্রী এবং আত্মীয় স্বজনের চেয়ে হেলিকপ্টার দেখা উৎসুক জনগণই ছিল বেশী। আগামীর জীবন যাতে সুন্দর হয় সেজন্য নতুন এই নব দম্পতির জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

আর এমন ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১০ মার্চ) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘলীয়া গ্রামে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘলীয়া গ্রামের সিদ্দিক হাওলাদারের ছোট ছেলে মলয়েশিয়া প্রবাসী মোরছালিন হাওলাদারের সাথে একই গ্রামের ব্যবসায়ী কালাম শেখের মেয়ে ফারিয়া খাতুনের বিয়ে ঠিক হয়। শুক্রবার ছিল বিয়ের দিন।

৫ ভাইয়ের মধ্যে বর মোরছালিন সবার ছোট। তারা ৫ ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী। বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল তাদের ছোট ছেলের বউকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসবে।

মা বাবার স্বপ্ন পূরণে মা বাবাকে সাথে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে আসেন প্রবাসী মোরছালিন হাওলাদার। দুপুর ২ টায় কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘলীয়া গ্রামের এগারো বাড়ির মাঠে অবতরণ করে তাদের বহনকৃত হেলিকপ্টারটি। পরে হেলিকপ্টার থেকে মা বাবাকে সাথে নিয়ে কনের বাড়িতে যান বর মোরছালিন। এরপর সেখানে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

এ বিয়েতে ফারিয়া খাতুনের পিতা ব্যবসায়ী কালাম শেখ আত্মীয় স্বজনসহ প্রায় হাজার খানেক অতিথিকে দাওয়াত করেন। মাংস, পোলাও, মাছ, ফিন্নি, দই, মিষ্টিসহ ছিল খাবারের নানা আয়োজন। বিয়ে শেষে আবারও ওই হেলিকপ্টারে করে মা, বাবা আর নববধূকে নিয়ে ফিরে যান মোরছালিন।

এলাকাবাসী কবির শেখ বলেন, আমাদের গ্রামে এই প্রথম কোন বর হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে আসলো। আমরা হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগলো।

হেলিকপ্টার দেখতে আসা মুক্তা খানম বলেন, আমি কখলো হেলিকপ্টার দেখিনি। এখান হেলিকপ্টার আসবে শুনে দেখতে আসলাম। হেলিকপ্টার নামরা পর দেখলাম বর তার মা বাবাকে নিয়ে এসেছে। হেলিকপ্টার দেখে খুব খুশি।

বরবমোরছালিন হাওলাদারের বড় ভাই আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, আমরা ৫ ভাই মালয়েশিয়া থাকি। এই ৫ ভাইয়ের মধ্যে মোরছালিন সবার ছোট। বাবা- মায়ের ইচ্ছা ছিল তাদের ছোট ছেলের বউকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসবে। তাই আমরা ৫ ভাই মিলে এই হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করেছি।

বর মোরছালিন হাওলাদার বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা ৫ভাই মিলে ২ লক্ষ ২০হাজার টাকায় দিয়ে ৩ঘন্টার জন্য একটি হেলিকপ্টার ভাড়া করেছি। এই হেলিকপ্টারে আমার বাবা-মাকে সাথে নিয়ে আমি কনের বাড়িতে এসেছি। এ জন্য আমার বাবা, মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই খুশি।

কনের পিতা কালাম শেখ বলেন, একই এলাকায় আমি আমার মেয়ে ফারিয়া খাতুনকে বিয়ে দিয়েছি। আমার জামাই তার বাবা-মাকে সাথে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে আমাদের এসেছে। এই হেলিকপ্টার ওঠা নামা দেখার জন্য এলাকার শত শত মানুষ ভীর করেছিল। আমি আমার মেয়ে-জামাইয়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

(এমএস/এএস/মার্চ ০৯, ২০২৪)