গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দিন দিন শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না। এমনকি ভাল চাকরিতেও প্রবেশ করতে পারছে না। এ নিয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল সহ অন্যান্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ টুঙ্গিপাড়া খান সাহেব শেখ মোশররফ হোসেন স্কুল এ্যান্ড কলেজের কৃতি ৫০ শিক্ষার্থীকে সম্বর্ধনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তারা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

আনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের শিক্ষার মান নেমে যাওয়ার জন্য তিনি শিক্ষা কর্মকর্তার উদাসীনতা, প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা ও পরীক্ষায় আসদুপায় অবলম্বনকে দায়ী করেন। তিনি বিদ্যালয়গুলোতে মনিটরিং সহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহন করে শিক্ষার মানোন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সেনেরচর-বাশুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রফুল্ল কুমার বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার মান নেমেছে এটি জলজ্যান্ত সত্য। শিক্ষা প্রদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের শতভাগ পাশ করাতে হবে বলে আমাদের উপর চাঁপ থাকে। এ কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পড়াশেনা করে না। তাই শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমি এ উপজেলায় গত বছর যোগদান করেছি।শিক্ষার মান বাড়াতে এসএসসি ও এইচএসসি সহ সব পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রতিরোধ করেছি। এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এ কারণে আমার উপর অনেকেই নাখোশ। শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন বন্ধ । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্লাস মনিটরিং সহ অন্যান্য সব বিষয়ের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে ।

বিশেষ অতিথির বক্তেব্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর সৈয়দ জাফর আল বলেন, আমাদের অধিদপ্তরের নিয়োগে টুঙ্গিপাড়া থেকে ৩য়, ৪র্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ পেয়েছে । উচ্চ পদে কেউ চাকরি পায় নি । এ থেকে বোঝা যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে। এখানকার শিক্ষার মানোন্নয়নে আমার বিশেষ কর্মসূচী গ্রহন করব। এতে দ্রুত ‍শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নেমে যাওয়ার পেছনে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ইচ্ছা থাকলেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন করা যায় । আপাদের (কর্মকর্তা) বিষষে মনিটরিং করা হবে। আগামী ২ মাসের মধ্যে শিক্ষার মানোন্নয়ন না হলে শুধু বদলী নয় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি শিক্ষানুরাগী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রবীণ সদস্য শেখ কবির হোসেন বলেন, সার্টিফেকেটের জন্য পড়াশোনা না করে মানুষ হবার জন্য পাড়াশোনা করতে হবে। লেখাপড়ার মানোন্নয়নে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল এ্যান্ড কলেজ জেলার মধ্যে ভাল করছে। আরো ভাল করতে হবে। লেখাপড়া মনোযোগ দিয়ে করলে জীবন মান উন্নয়ন হবে। লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হতে হবে, মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে হবে। দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

(এমএস/এএস/মার্চ ০৯, ২০২৪)