গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : ইলেকট্রিক শক দিয়ে বিশেষ কায়দায় মাছ শিকার করে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে রবিবার রাতে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া গ্রামের বসরত খালে অভিযান পরিচালনা করেন  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মহসিন উদ্দীন। 

ওই খালে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরার সময় ৮ ব‌্যক্তিকে আটক করে ভ্রাম‌্যমান আদালত।

এসময় তাদের কাছ থেকে শক লাইটের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও চায়না জাল জব্দ করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন ওই ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।
সাজা প্রাপ্তরা হলো: গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া গ্রামের আহাদ আলী খানের ছেলে লিংকন খান (৩২), হান্নু মোল্লার ছেলে হাবিল মোল্লা (২৭), সিদ্দিক মোল্রার ছেলে রবিউল মোল্লা (২৮), শ্মশান বিশ্বাসের ছেলে সুভাষ বিশ্বাস (৩২), রাউত খামার গ্রামের বিমল ভৌমিকের ছেলে চন্দন ভৌমিক (৩৩), মানিকহার গ্রামের শান্তি হাজরার ছেলে তারক হাজরা (৫০), কাশিয়ানী উপজেলার বিদ্যাধর গ্রামের জামাল জমাদ্দারের ছেলে নূর জমাদ্দার (৩৫) এবং নূরের অপর ভাই রানা জমাদ্দার (২৮)। এদের মধ্যে প্রথম ৭ জনকে ১৫ দিন করে এবং শেষ জনকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রাতেই তাদেরকে সাজা দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ভ্রাম্যমান আদালত। সোমবার তাদেরকে পুলিশ জেল হাজতে পাঠিয়েছে ।

গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজন নন্দী বলেন, চীনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক শ্রেণির মৎস্য শিকারী জেলার নদ নদী, খাল, বিল ও বাওড়ে পানির মধ্যে ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে পানিকে বিদ্যুতায়িত করে । এতে জলাশয়ের একটা নির্দিষ্ট এলাকার পানি বিদ্যুতায়িত হয়। ওই এলাকার মাছ কিছু সময়ের জন্য অচেতন হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। তখন মৎস্য শিকারিরা ওইসব মাছ ধরে ফেলে। এতে বড় মাছের পাশাপাশি ছোট মাছ মরে ভেসে ওঠে। ফলে জেলার নদী,খাল ও বিলের মাছ উজার হচ্ছে।সেই সাথে ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র। এটি বন্ধ করে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি। ফলশ্রুতিতে উপজেলা প্রশাসন দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় অভিযান শুরু করেছে । এটি অব্যাহত থাকলে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র রক্ষা করা সম্ভব হবে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন বলেন, নদী, খাল, বিল ও বাওড়ে বিদ্যুতের শক দিয়ে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় মাছ শিকার করে এলাকার মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করছে এক শ্রেণির মৎস্য শিকারি।এটি বন্ধ করতে আমরা অভিযান শুরু করেছি। রবিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার নিজড়া গ্রামের বসারত খলে মাছ শিকারের সময় ৮ জন মৎস্য শিকারীকে আটক করা হয়। এদর মধ্যে ৭ জনকে ১৫ দিন করে এবং একজনকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা ।

(এমএস/এএস/মার্চ ১১, ২০২৪)