স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভূরুলিয়া এলাকায় একটি মসজিদ ও মাদ্রাসায় যাতায়াতের রাস্তা দখল করার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের হলেও প্রতিকার হচ্ছে না বলে জানায় এলাকাবাসী। ফলে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা।

সোমবার (১৮ মার্চ) সরেজমিন ঘুরে ও এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে জানা যায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের ভূরুলিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদ ও হিম্মত সরকার কওমী মাদ্রাসায় যাতায়াতের একটি রাস্তা বন্ধ ও দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মানের বিরুদ্ধে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর সিটি উন্নয়ন কতৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হয়, কিন্তু প্রতিকার হচ্ছে না।

২৫ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মজিবুর রহমান সরকার জানান, উল্লিখিত রাস্তাটি বহ পুরনো একটি রাস্তা। সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে মসজিদ-মাদ্রাসায় যাতায়াতের সুবিধার্থে এই রাস্তাটি কয়েক বছর আগে নতুন করে নির্মান করা হয়। চলমান এই রাস্তা দখল করে অনুমোদন বিহীন স্থাপনা নির্মাণসহ অবৈধ সরঞ্জাম রেখে বন্ধ করার অভিযোগ পেয়ে আমি এবং ২৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হানু উপস্থিত হই এবং স্থানীয় জনসাধারণের উপস্থিতিতে রাস্তার উপর থেকে প্রতিন্ধকতা সরিয়ে রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করে দেই। কিন্তু অমরা চলে আসার পর পর দখলদার জাহাঙ্গীর ও তাাঁর স্ত্রী আরো বেশী পরিমান নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাস্তাটি ফের বন্ধ করে দেয় যা অনাকাঙ্খিত, অমানবিক এবং ইমারত নির্মাণ ও সিটি কর্পোরেশনের বিধি বিধান পরিপন্থী।

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মুরাদ হোসেন জানান, ২৫ নং ওয়ার্ডে মসজিদ মাদ্রাসায় যাতায়াতের একটি চলমান রাস্তার উপর অনুমোদনহীন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণসহ রাস্তা বন্ধ করার বিষয়ে গত ২৯ ফেরুয়ারী গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি তদন্ত করেছি, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্রো সদর থানার মাধ্যমে নোটিশ পাঠিয়েছি।

ভূরুলিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদের সাধরণ সম্পাদক রাহিম সরকার জানান, মসজিদ-মাদ্রাসায় চলাচলের রাস্তা বন্ধে করার বিষয়টি মুসল্লিরা জানানোর সাথে সাথে রাস্তা বন্ধ করার বিষয়ে প্রতিবাদ করি এবং রাস্তাটি খুলে দেওয়ার অনুরোধ করি। কিন্তু জাহাঙ্গির আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় যা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। ফলে আমি জনস্বার্থে প্রথমে স্থানীয় কাউন্সিলরকে রাস্তাটির বিষয়টি অবগত করলে তারা রাস্তা খুলে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় কাউন্সিলরা চলে যাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই জাহাঙ্গির ফের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় এবং এখানে মুসুল্লিদের সাথে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে মানবিক কারণে আমি প্রথমে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করি, কিন্তু তদন্ত শেষে রহস্যজনক কারণে উন্নায়ন কতৃপক্ষ নিরব হয়ে যায়। এতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাস্তা দখলে একটি ভিডিও চিত্রসহ মুসুল্লিদের যাতায়াতে অসুবিধার কথা জানিয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করি এবং এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ১৪ মার্চ গাজীপুর জেলা প্রশসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করি।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর জানান, সে ও তার স্ত্রী দুই বছর আগে ক্রয় সুত্রে এই জমি মালিক হয়েছে। দলিলে কোন রাস্তা উলেখ্য নেই। তাই সে এই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অন্য সব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।

এলাকাবাসী জানায়, জাহাঙ্গীর ও তাঁর পরিবার মাদকাশক্ত এবং সবাই মাদক ক্রয় বিক্রয়ের অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত। এই রাস্তাটি সচল থাকলে অবাদে মাদক ব্যবসাটি চালিয়ে যেতে পারে, মাদকের অবৈধ টাকার জোরে সে সবাইেেক সহজে মেনেজ করে নিতে পারে। এসব কারণে এলাকায় অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

(এস/এসপি/মার্চ ১৮, ২০২৪)