শেখ ইমন, শৈলকুপা : ষাটোর্ধ্ব মনোয়ারা বেগম,বাড়ির যাবতীয় কাজ শেষে এসেছেন পেঁয়াজের উচ্ছিষ্ট কাটতে। সারাদিন কাটবেন, এরমাঝেই সংসারের নানা কাজকর্মও সারবেন। তারপরও প্রায় ৪ মণ  পেয়াজ কাটতে পারবেন তিনি। প্রতিমণ পেঁয়াজের উচ্ছিষ্ট বা ডগা কেটে আলাদা করলে পাবেন ৫০ টাকা। তাতে আয় হবে ২’শ থেকে ২’শ ৫০ টাকা।

সংসার, সন্তান দেখাশোনাসহ বাড়ির নানা কাজের মধ্যে কিছু আয়ের জন্য ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গৃহস্থ নারীরা পেঁয়াজের ডগা কেটে বাড়তি উপার্জন করছেন। মণপ্রতি ৫০ টাকা উপার্জনে খুশি গ্রামের এই নারীরা। শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নারীদের বাড়ির আঙ্গিনায় ও খোলা জায়গায় পেঁয়াজের ডগা কাটতে দেখা যায়।

এ সময় পেঁয়াজের ডগা বটিতে কেটে বাছাই করছিলেন দামুকদিয়া গ্রামের সাগরিকা বেগম। তিনি বলেন, ‘সকালে বাড়ির কাজ শেষ করে এসেছি, সারাদিন কাটবো। তাতে প্রায় ৪মণ কাটতে পারবো।’

পপি খাতুন সাগরিকা বেগমের পাশে বসেই পেঁয়াজের ডগা কাটছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই এলাকার অনেক মহিলারা আছেন যারা বাড়ির কাজ শেষে পেঁয়াজ কাটা ও বাছাইয়ের কাজ করেন। পেঁয়াজ কেটে বাছাইয়ের জন্য মণপ্রতি ৫০ টাকা করে পান।

তাদের পাশে আরো কাজ করছেন অসংখ্য নারীরা, তারা জানান, গ্রামে শুধু দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের নারীরাই নয়, গৃহস্থ’ বাড়ির বউয়েরাও পেঁয়াজ কেটে আয় করছে।

পুরুষদের তুলনায় নারীদের আয় অনেক কম হলেও এটা বাড়তি উপার্জন, বাড়ির অন্যান্য কাজ শেষে অবসর সময়ে এই কাজ করে উপার্জন করছেন বলে জানান তারা।

জোহরা বেগম বলেন,‘এই টাকা দিয়ে বাচ্চাদের হাত খরচ, সংসারে এইটা ওইটা কিনেও কিছু জমানো যায়। কাজের সুযোগ থাকলে বসে থাকে না এ এলাকার মেয়েরা। এখানকার মেয়েরা খুবই কর্মঠ।’

নারীদের পারিশ্রমিক একটু কম বলে জানান পেঁয়াজের মাঠে কাজ করতে থাকা তাহের ও রানা। তাহের বলেন, ‘নিজেদের খেয়ে ৫’শ টাকা দিনে শুধু পেঁয়াজ জমি থেকে তুলে দেই। পেঁয়াজ কাঁটা ও বাছাইয়ের কাজ করেন নারীরা। তাদের এই কাজে কষ্ট আছে; কিন্তু বাড়ির কাজের পাশাপাশি এটা তাদের বাড়তি আয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর এ উপজেলায় ৮ হাজার ৫ শত ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

(এসই/এএস/মার্চ ২৩, ২০২৪)