আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষর জাল করে তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অপপ্রচারের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়ায় উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের।

আজ শনিবার সকালে মামলার বাদি ওই গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার স্ত্রী মনিকা সরকার বলেন, তার দেবর সমির হাজরার ছেলে সুব্রত হাজরা ও পুনরদান হাজরার ছেলে এ্যালেন হাজরা আমাদের সহয় সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য দীর্ঘদিন থেকে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর স্বাক্ষর জাল করে আমার নামে একটি ভুয়া তালাকনামা তৈরি করেছে। ওই তালাকনামার স্বাক্ষরের সাথে আমার স্বামীর অন্যান্য কাগজপত্রের স্বাক্ষরের কোন মিল নেই। এ ঘটনায় তিনি (মনিকা) উল্লেখিতদের আসামি করে গত ১৯ মার্চ বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরা একমাত্র কন্যা এঞ্জেলিনা তন্নী হাজরা বলেন, আমার মা মনিকা সরকারকে জীবদ্দশায় আমার বাবা তালাক দেয়নি। চাচাতো ভাই সুব্রত হাজরা ও এ্যালেন হাজরা আমার পিতার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া একটি তালাকনামা বানিয়েছেন। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ভাই মিলন হাজরা বলেন, আমার বড় ভাই ফ্রান্সিস বিনয় হাজরা জীবদ্দশায় আমার ভাবী মনিকা সরকারকে তালাক দেয়নি। ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভাবী তার স্বামীর ঘরে বসবাস করে আসছেন। মূলত আমার অপর ভাইয়ের ছেলেরা বিধবা ভাবীর টাকা ও সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছে।

স্থানীয় বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, আমার জানামতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। কারণ বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ইউনিয়ন পরিষদে একটি কপি আসতো।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধার আইয়ুব আলী মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী হাওলাদার, আবু তাহের মিয়া ও সিরাজুল হক সরদার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়ে এমন মিথ্যাচার যারা করেছে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। অভিযুক্ত সুব্রত হাজরা ও এ্যালেন হাজরা বলেন, ওই তালাকনামার স্বাক্ষর আমার মুক্তিযোদ্ধা চাচার। এরসাথে আমাদের কোন যোগসূত্র নেই।

(টিবি/এসপি/মার্চ ২৩, ২০২৪)