রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ সড়ক গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফসল মাড়াই করা হচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে, যানবাহন গুলো তাদের  গন্তব্যে পৌঁছতেও দেরি হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।

জানা গেছে, জেলায় সড়ক ও জনপথের ১৭০ কিলোমিটার এবং এলজিইডির ২ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার পাকা ও কাঁচা সড়ক রয়েছে। প্রায় ১০ বছর ধরে নড়াইল-গোবরা-সিঙ্গাশোলপুর-পেড়লী, নড়াইল-মাইজপাড়া, নড়াইল-মুলিয়া, জয়পুর-লাহুড়িয়া, লক্ষ্মীপাশা-মহাজন, নড়াইল-কালিয়া, ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল, নড়াইল-ফুলতলা, কালিয়া-চাপাইলসহ প্রত্যেকটি সড়কের ওপর বিভিন্ন মৌসুমী ফসল শুকানো এবং মাড়াই করা হচ্ছে। এসব সড়ক হয়ে উঠেছে উঠোন। আউস, আমন, বোরো, খেসাড়ি-মসুর ডাল, গমসহ বিভিন্ন ফসল এখন রাস্তার ওপরেই মাড়াই ও শুকানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে গাড়ির চালক, যাত্রী ও পথচারীরা জানান, 'সড়কে ফসল শুকানো এ জেলার ' 'কালচার' হয়ে দাড়িয়েছে। সড়কে ফসল শুকাতে নিষেধ করলে, কৃষকরা সড়ক থেকে ফসল তো অপসারণ করে না, উল্টো গালমন্দ করে। দূর্ভোগ মেনে নিয়ে সড়কে চলতে হচ্ছে'।

লক্ষ্মীপাশা-মহাজন সড়কের থ্রি হুইলার চালক মো: মুসা মিয়া বলেন, ' সড়কগুলোর ওপর কৃষকেরা সারা বছরই বিভিন্ন ফসল মাড়াই ও শুকিয়ে থাকে। ফলে গাড়ির চাকা ও মোটরসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশে ফসল জড়িয়ে চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, আবার যানবাহনের ক্ষতি হয়ে থাকে'।

নড়াইল সদর উপজেলার তারাপুর গ্রামের নওশের মোল্যা (৬৫) বলেন, ‘বাফুরে (বাবা) বুঝি মানুষের ক্ষতি হয় কিš‘ কি করবো, বৃষ্টি-বর্ষার জন্যি পাকা রাস্তার উপর ফসল শুকাতি সুবিদে হয়। তাছাড়া বাড়ির উঠানেও কাদা হয়ে গেছে।’

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ খায়রুল আলম বলেন, রাস্তার ওপর ফসল শুকানো ও মাড়াইয়ের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এ জেলায় ৮ বছরে সড়কে ফসল শুকানোর কারণে ১ জনের মৃত্যু, কয়েকশ মানুষ আহত এবং প্রায় ১০ জন পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আইন করে সড়কে ফসল মাড়াই বন্ধ করা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়টি জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। রাস্তায় যাতে কেউ কোনোপ্রকার ফসল শুকাতে না পারে, সেজন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবগত করা হবে এবং আইনশৃঙ্খলার সভায় বিষয়টি আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
রূপক মুখার্জি
নড়াইল।

(আরএম/এএস/মার্চ ২৭, ২০২৪)