রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আগামি উপজেলা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান ও তার স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি নিজ অনিবন্ধিত ফেইস বুক পেইজ সমাজের আলো ডট কম এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মশিয়ার রহমান বাদি হয়ে সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনসহ চারজনের নামে খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনালে আজ বুধবার এ মামলা দায়ের (সিআর- ৩০/২৪) করেন। বিচারক কণিকা বিশ্বাস আগামি ২৫ মে এর মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তুজুলপুর গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে ইয়ারব হোসেন, তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুল হাকিম রাজু, শ্যামল ঘোষ, পাটকেলঘাটা থানাধীন বিশেষ কাটিগাছা গ্রামের সূর্যকান্ত মন্ডলের ছেলে ভবতোষ মন্ডল।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনের নিজ মোবাইল নং ও ই মেইল দিয়ে অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সমাজের আলো ডট কম ফেইস বুক পেইজের মাধ্যমে তালা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তালা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মশিয়ার রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুমিনা পারভিন রুমার ব্যক্তিগত ও আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেন। রুমিনা পারভিন রুমা ৩০ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে নিজ বাড়ি তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামে বসে ইয়ারব হোসেনের নিজস্ব ফেইসবুক আইডি থেকে দেখতে পান। যাহা বাদি ও তার স্ত্রীর সামাজিক সম্মান প্রশ্নবিদ্ধ, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন, মানহানি ও আগামি উপজেলা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার উদ্দেশ্যে ইয়ারব হোসেন তার (মশিয়ার) প্রতিপক্ষদের দারা প্রভাবিত হয়ে করেছেন। ইয়ারব হোসেন নিজ আইডি থেকে কমেন্টস পোষ্ট করে তিন চারজনকে নিজ ফেইসবুক আইডি থেকে শেয়ার করেন। উক্ত পোষ্ট অনেকে কমেন্টস ও পোষ্ট করে শেয়ার করেন। এ ছাড়া আব্দুল হাকিম রাজু , শ্যামসল ঘোষ ও ভবতোষ মন্ডল নিজ নিজ ফেইস বুকব আউডি থেকে শেয়ার ও পাষ্ট করেন। ইয়ারব হোসেন তার (মশিয়ার) নির্বাচনী প্রতিপক্ষদের সঙ্গে পরামর্শ করিয়া এ কাজ করিয়েছেন। বিষয়টি ইয়ারব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে সবে তো ভাইরাল করা হয়েছে, পরে এমন করে দেব যে চেয়ারম্যানি ছেড়ে পালাতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ৩১ মার্চ তালা থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

খুলনা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. শহীদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহম্মেদ বাপ্পি সম্পর্কে নিজ ফেইসবুক আইডির মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে তারই খালাতো ভাই বাংলাভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোঃ আসাদুজ্জামান ২০২১ সালে ইয়ারব হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। প্রায় একই সময়ে তুজুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্যম্প করে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় এক স্বাস্থ্য কর্মীকে মারপিটের অবিযোগে দায়েরকৃত মামলায় ইয়ারব হোসেন কারাগারে যান। ঝাউডাঙা ইউনিয়নের পাথরঘাটার ২০১৯ সালে একটি বাড়িতে পুলিশের সহায়তায় ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি বর্তমানে সিআউডিতে তদন্তাধীন আছে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ০৩, ২০২৪)