বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা মো. নাছির উদ্দিনের মালিকানাধীন 'জনতা ব্রিক ফিল্ড' (ইট ভাটা) কে নগদ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকরামুল হক নাহিদ ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এ জরিমানা করেন। পরে নগদ ৫ লাখ টাকা আদায়ও করা হয়।

জানা গেছে, নবীনগর উপ‌জেলার বগডহর মৌজায় অবস্থিত জনতা ব্রিক ফিল্ডে দুপুর দেড়টার দিকে আকস্মিক এক অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইকরামুল হক নাহিদ এর নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতার ওই ইটভাটায় প্রয়োজনীয় মাটি কাটার লাইসেন্স না থাকা এবং নিষিদ্ধ এলাকায় ভাটা স্থাপন করা হচ্ছে, এমন অভিযোগে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধন), ২০১৯ এর ৫ ও ৮ ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে জনতা ব্রিকস নামের ওই ইট ভাটাকে নগদ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকরামুল হক নাহিদ বলেন, ‘ইটভাটা স্থাপন আইনের ১৫ ও ১৮ ধারায় পরিবেশ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সহকারী পরিচালক বিমল চক্রবর্তীর প্রসিকিউশনের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান চলাকালে ওই ইনভাটাকে নগদ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে পরে সেই টাকা আদায়ও করা হয়।’

এ নিয়ে ইট ভাটার মালিক নাছির উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগ করেন, ‘দুপুরে আমাকে নবীনগর ডাক বাংলোতে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ডাকেন। সেখানে গিয়ে আমার ইটভাটার সব বৈধ কাগজপত্র দেখানোর চেষ্টা করলেও, তিনি (ম্যাজিস্ট্রেট) সেইসব কাগজপত্র দেখতেই চাননি।’

নাছির ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘জনতা ইটভাটার আশেপাশে আরও অনেকগুলো ইটভাটা রয়েছে। অথচ একমাত্র আমাকে টার্গেট করেই যেন এই 'বিশেষ' অভিযানটি করা হল।’ নাছির উদ্দিন এ বিষয়ে শিগগীরই 'আপিল' করবেন বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকরামুল হক নাহিদ মুঠোফোনে বলেন, 'আমরা জনতা নামের ইট ভাটাতে গিয়ে যখন অভিযানটি পরিচালনা করি, তখন স্পটে 'ইনস্ট্যান্ট' কোন কাগজপত্রই মালিক পক্ষ দেখাতে পারেনি। তাই আইন মেনেই জরিমানা করেছি। আর মোবাইল কোর্টে সব সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবেই নেয়া হয়।'

তিনি বলেন, ‘অভিযান চলমান আছে। সুতরাং এ ধরণের অভিযান এখন থেকে নিয়মিতই আপনারা (সাংবাদিক) দেখতে পাবেন।’

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিন দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের প্রধান সাবেক এমপি এবাদুল করিম বুলবুলের অনুসারী নেতা।

(জিডি/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২৪)