চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার ভারত গমনেচ্ছুরা ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। দিন দিন ভ্রমণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভিসা পেতে নানা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন জেলাবাসী। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু দালাল নানা অজুহাতে হাতিয়ে নিচ্ছেন বাড়তি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তি চুয়াডাঙ্গা জেলায় চিকিৎসা, ভ্রমণসহ নানা কারণে ভারত গমনেচ্ছু যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভিসা সংক্রান্ত আবেদন অনলাইন হওয়ার সুযোগে দালালরা নিচ্ছেন আকাশছোঁয়া ফি। প্রতি পাসপোর্টধারী আবেদনকারীর কাছ থেকে ই-টোকেন বাবদ নিচ্ছেন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। অথচ, ব্যক্তি উদ্যোগে ভিসার আবেদন করেন এমন কয়েকজন বললেন, একটি ভিসার জন্য ভারতীয় সরকারের ফি মাত্র ৪০০ টাকা।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি মহল্লার রুহুল আমিন পেশায় শিক্ষক। তিনি জানালেন তার কয়েক আত্মীয় চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর ভারতে যান। কোন বছরই ভিসার জন্য তেমন বেগ পেতে হয় না। নাম মাত্র খরচেই ভিসা সংগ্রহ করতেন তিনি। কিন্তু এবার ভিসার জন্য হন্যে হয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু কোনো কূল কিনারা পাচ্ছেন না তিনি। একেক দালাল একেক রকম ফি দাবী করছেন। তবে সাড়ে ৩ হাজারের কমে কোথাও আশ্বাস পাননি তিনি।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের ফেরি ঘাট রোডে সঞ্জিত কুমার কর্মকার জানালেন, ‘আমরা ই-টোকেনের জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা নিচ্ছি। তারপরও কাউকে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না কত দিনের মধ্যে তাদের ভিসা করে দিতে পারবো। যাদের মাধ্যমে আমরা অনলাইনে আবেদন করি তারাই এক একটি ই-টোকেনের জন্য ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা নিচ্ছেন। আমাদের কিছুই করার থাকছে না।’

একই এলাকার অপর ব্যবসারী রাজন কুমার নাথ জানালেন, ‘আমরা তো এখন ভিসার কাজ একরকম নিচ্ছিই না। কারণ একটি ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি মাত্র ৪০০ টাকা। অথচ যারা অনলাইনে টোকেন দিচ্ছেন তারাই নিচ্ছেন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। তারপরও নিশ্চয়তা নেই আবেদন করলেই টোকেন পাওয়া যাবে ! এজন্য গ্রাহকদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে আমরা পারতপক্ষে ভিসার কাজ নিচ্ছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাইবার ক্যাফের মালিক বললেন, ইদানিং অনলাইনে আবেদন খানিকটা ঝামেলাপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একটা আবেদন করতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ই-টোকেন পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা হঠাৎ করেই কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ফলে আবেদনের সাবমিশন বার বার ফেল হচ্ছে। আবেদন কাজের পিছনে সময় নষ্ট হচ্ছে অথচ ফলাফল নেই। এ কারণে আমরা কিছুটা বেশি ফি নিচ্ছি। কোনো দিন ১/২টা টোকেন পাচ্ছি আবার কোনো দিন পাচ্ছিই না।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার এলাকায় আসা একজন আবেদনকারী বললেন, যেসব দালালেরা ভিসা প্রসেস করার কাজ করে থাকেন তারাই মূলত আবেদনটাও করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা নানা অজুহাতে বাড়তি ফি নিচ্ছেন।

(জেএ/অ/নভেম্বর ১৬, ২০১৪)