আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ মার্চ মাস গেছে সম্প্রতি। এর ফলে টানা ১০ মাসে নতুন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড দেখলো বিশ্ব। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।

ইইউ’র কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ মনিটরিং সার্ভিসের (সি৩এস) তথ্যমতে, বিগত ১০ মাসের প্রতিটি তার আগের যেকোনো বছরের একই সময়ের তুলনায় ছিল সবচেয়ে উষ্ণ। শুধু তা-ই নয়, গত মার্চে শেষ হওয়া বছরটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ ১২ মাসের সময়কাল।

সি৩এস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ছিল ১৮৫০ থেকে ১৯৫০ সালের প্রাক-শিল্প সময়কালের গড়ের তুলনায় ১ দশমিক ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

সংস্থাটির উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এটি ব্যতিক্রমী রেকর্ডের দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা, যা আমাদের খুব উদ্বিগ্ন করেছে।

তিনি বলেন, এভাবে মাসে মাসে রেকর্ড দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদের জলবায়ু সত্যিই পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তা দ্রুত ঘটছে।

বর্তমান রেকর্ড অনুসারে, ২০২৩ সাল হচ্ছে বৈশ্বিক ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। কিন্তু ২০২৪ সালেও মারাত্মক আবহাওয়া ও অস্বাভাবিক তাপমাত্রা দেখছে বিশ্ব।

অ্যামাজন রেইনফরেস্ট অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত খরায় জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলায় রেকর্ড সংখ্যক দাবানল সৃষ্টি করে। এতে আফ্রিকার দক্ষিণাংশে বিপুল ফসল ধ্বংস হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে।

গত মাসে সামুদ্রিক বিজ্ঞানীরাও সতর্ক করেছেন, উষ্ণ পানির কারণে দক্ষিণ গোলার্ধে সম্ভবত বিশাল প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা শুরু হচ্ছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ হতে পারে।

সি৩এস বলেছে, সাম্প্রতিক রেকর্ড তাপমাত্রার প্রাথমিক কারণ মানবসৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আবহাওয়ার এল নিনো দশা। এটির কারণে সাধারণত পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পৃষ্ঠভাগের পানি উষ্ণ হয়ে ওঠে।

এল নিনোর প্রভাব গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে শীর্ষে উঠেছিল। কিন্তু সেটি এরই মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়ছে, যা বছরের শেষের দিকে রেকর্ড উষ্ণতার ধারা ভাঙতে সাহায্য করতে পারে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০৯, ২০২৪)