ডেস্ক রিপোর্ট : মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার ১৭ নভেম্বর। এই মহান নেতাকে মওলানা ভাসানী নামে জানতো সবাই। এই নামেই তিনি সাধারণ মানুষের আপনজনে পরিনত হয়েছিলেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় মাওপন্থী কম্যুনিস্ট তথা বামধারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার অনুসারীরা  এজন্য তাকে "লাল মওলানা" নামেও ডাকতেন।
তার নাম মওলানা ভাসানী হওয়ার নেপথ্য অনেকের কাছেই অজানা।

মওলানা ভাসানী ১৯২৯-এ আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসান চরে প্রথম কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেন। এখান থেকে তার নাম রাখা হয় "ভাসানীর মওলানা"। এরপর থেকে তার নামের শেষে ভাসানী শব্দ যুক্ত হয়।

মওলানা ভাসানী ছিলেন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক জীবনে তিনি আজীবন শোষিত মানুষের পক্ষ নিয়ে শাসকগোষ্ঠীকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব সময় থেকেছেন আপসহীন নেতৃত্বের ভূমিকায়।
মওলানা ভাসানী ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের মানুষের কাছে `মজলুম জননেতা` হিসাবে সমধিক পরিচিত। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম।
মওলানা ভাসানী ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা এবং পঞ্চাশের দশকেই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ একটি অচল রাষ্ট্রকাঠামো। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের কাগমারী সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের `ওয়ালাকুমুসসালাম` বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।
মওলানা ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হাজী শরাফত আলী ও মায়ের নাম মজিরন বিবি। মক্তব হতে শিক্ষাগ্রহণ করে কিছুদিন মক্তবেই শিক্ষকতা করেন। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে পীর সৈয়দ নাসীরুদ্দীনের সাথে আসাম গমন করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ইসালামিক শিক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯০৭-এ দেওবন্দ যান। দুই বছর সেখানে অধ্যয়ন করে আসামে ফিরে আসেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ময়মনসিংহ সফরে গেলে তার ভাষণ শুনে ভাসানী অনুপ্রাণিত হন।
মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক জীবন বর্ণাঢ্য। ১৯১৯ সালে কংগ্রেসে যোগদান করে খেলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে দশ মাস কারাদণ্ড ভোগ করেন। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্বরাজ পার্টি গঠন করলে ভাসানী সেই দল সংগঠিত করার ব্যাপারে ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৬-এ আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান।
১৯৩১-এ সন্তোষের কাগমারীতে, ১৯৩২-এ সিরাজগঞ্জের কাওরাখোলায় ও ১৯৩৩-এ গাইবান্ধায় বিশাল কৃষক সম্মেলন করেন। ১৯৩৭-এ মাওলানা ভাসানী কংগ্রেস ত্যাগ করে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। সেই সময়ে আসামে `লাইন প্রথা` চালু হলে এই নিপীড়নমূলক প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন। এসময় তিনি "আসাম চাষী মজুর সমিতি" গঠন করেন এবং ধুবরী, গোয়ালপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
১৯৪০ সালে তিনি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে মুসলিম লীগের লাহোর সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৪৪ সালে মাওলানা ভাসানী আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৫-৪৬ সালে আসাম জুড়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে "বাঙ্গাল খেদাও" আন্দোলন শুরু হলে ব্যাপক দাঙ্গা দেখা দেয়। এসময় বাঙালিদের রক্ষার জন্য ভাসানী বারপেটা, গৌহাটিসহ আসামের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ান। পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৯৪৭ সালে আসামে গ্রেফতার হন। ১৯৪৮-এ মুক্তি পান। এরপর তিনি টাঙ্গাইলের সন্তোষে ফিরে আসেন।
১৯৪৮ সালের প্রথম দিকে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ ব্যবস্থাপক সভার কার্যাবলি বাংলায় পরিচালনা করার জন্য স্পিকারের কাছে দাবি জানান এবং এই দাবি নিয়ে পীড়াপীড়ি করেন।
১৯ মার্চ বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে বলেন, যেসব কর কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ববঙ্গ প্রদেশ থেকে সংগ্রহ করে তার শতকরা ৭৫% প্রদেশকে দিতে হবে। মুসলিম লীগ দলের সদস্য হয়েও সরকারের সমালোচনা করায় মুসলিম লীগের ক্ষমতাসীন সদস্যরা মওলানা ভাসানীর ওপর অখুশী হয় এবং তার নির্বাচনে ত্রুটি ছিল এই অজুহাত দেখিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে এবং মওলানা ভাসানীকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে। শেষে মওলানা ভাসানী ব্যবস্থাপক সভার সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এতদসত্ত্বেও পূর্ববঙ্গের তৎকালীন গভর্নর এক নির্বাহী আদেশ বলে মওলানা ভাসানীর নির্বাচন বাতিল করেন।
বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের জনবিরোধী কার্যকলাপের ফলে মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালের ২৩-২৪ জুন ঢাকার টিকাটুলিতে রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন আহ্বান করেন। ২৩ জুন ওই কর্মিসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশ থেকে প্রায় ৩০০ কর্মী সম্মেলনে যোগদান করেন। মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রধান অতিথি। ২৩ জুন পূর্ববঙ্গের প্রথম বিরোধী রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। মওলানা ভাসানী সর্বসম্মতিক্রমে এই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২৪ জুন আরমানীটোলা ময়দানে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৪৯ সালের মধ্যভাগে পূর্ববঙ্গে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ১১ অক্টোবর আরমানীটোলা ময়দানে আওয়ামী মুসলিম লীগের একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় খাদ্য সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার জন্য পূর্ববঙ্গ মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবী করা হয় এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মওলানা ভাসানী ভুখা মিছিলে নেতৃত্ব দেন। ভূখা মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ১৯৪৯-এর ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবরণ করেন।
১৯৫০ সালে সরকার কর্তৃক রাজশাহী কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ড এর বন্দীদের উপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অনশন ধর্মঘট পালন করেন এবং ১৯৫০ সালের ১০ ডিসেম্বর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২-র ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জেলার বার লাইব্রেরী হলে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠিত হয়। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সহযোগিতার কারণে গ্রেফতার হয়ে ১৬ মাস কারানির্যাতনের শিকার হন। অবশ্য জনমতের চাপে ১৯৫৩ সালের ২১ এপ্রিল মওলানা ভাসানীকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৯৫৩ সালের ৩ ডিসেম্বর কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট নামক নির্বাচনী মোর্চা গঠন করেন। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল বিজয় অর্জন করে এবং পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদে ২৩৭ টির মধ্য ২২৮ টি আসন অর্জনের মাধ্যমে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ফজলুল হকের নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পর ২৫ মে ১৯৫৪ মাওলানা ভাসানী বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে যান এবং সেখানে বক্তব্য প্রদান করেন।

৩০ মে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে গভর্ণরের শাসন জারি করে এবং মাওলানা ভাসানীর দেশে প্রত্যাবর্তনের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেন। ১১ মাস লন্ডন, বার্লিন, দিল্লী ও কলকাতায় অবস্থান করার পর তার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলে ১৯৫৫-র ২৫ এপ্রিল দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পূর্ব বাংলায় খাদ্যজনিত দুর্ভিক্ষ রোধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৫০ কোটি টাকা আদায়ের দাবিতে ১৯৫৬-র ৭ মে ঢাকায় অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। সরকার দাবি মেনে নিলে ২৪ মে অনশন ভঙ্গ করেন।
একই বছর ১২ সেপ্টেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-রিপাবলিকান পার্টির কোয়ালিশন সরকার গঠিত হলে মাওলানা ভাসানী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করে নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করার জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করেন।
১৯৫৬তে পাকিস্তান গণপরিষদে যে খসড়া শাসনতন্ত্র বিল পেশ করা হয় তাতে পাকিস্তানকে ইসলামিক রিপাবলিক বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল,তখন মাওলানা ভাসানী পল্টনের জনসভায় তার বিরোধিতা করে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছিলেন।
১৯৫৭-র ৭ অক্টোবর দেশে সামরিক শাসন জারি হলে আইয়ুব খান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১২ অক্টোবর মাওলানা ভাসানীকে কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকায় ৪ বছর ১০ মাস কারারুদ্ধ থাকেন।
বন্দী অবস্থায় ১৯৬২-র ২৬ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বন্যাদুর্গতদের সাহায্য ও পাটের ন্যায্যমূল্যসহ বিভিন্ন দাবিতে অনশন ধর্মঘট পালন করেন। ৩ নভেম্বর মুক্তিলাভ করেন এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট-এর রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত হন। ১৯৬৩-র মার্চ মাসে আইয়ুব খানের সাথে সাক্ষাত করেন। একই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর চীনের বিপ্লব দিবস-এর উৎসবে যোগদানের জন্য ঢাকা ত্যাগ করেন এবং চীনে সাত সপ্তাহ অবস্থান করেন।
১৯৬৪-র ২৯ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি পুনরুজ্জীবিত করে দলের সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং একই বছর ২১ জুলাই সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ) গঠনে ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৭-র ২২ জুন কেন্দ্রীয় সরকার রেডিও এবং টেলিভিশন থেকে থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ জারি করলে এর প্রতিবাদ করেন। ১৯৬৭-র নভেম্বর-এ ন্যাপ দ্বি-খন্ডিত হলে চীনপন্থি ন্যাপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে মাওলানা ভাসানী বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামীদের মুক্তি দাবি করেন।
১৯৭০ সালের ৬-৮ আগস্ট বন্যা সমস্যা সমাধানের দাবিতে অনশন পালন করেন। অতঃপর সাধারণ নির্বচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১২ নভেম্বর (১৯৭০) পূর্ব পাকিস্তানে প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্ণিঝড় হলে দুর্গত এলাকায় ত্রান ব্যবস্থায় অংশ নেয়ার জন্য ন্যাপ প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় `স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান` দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৭১ এর মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত যান এবং মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন।
২৫ মার্চ রাতে মওলানা ভাসানী সন্তোষে তার গৃহে অবস্থান করছিলেন। তিনি পাকিস্তান বাহিনীর দৃষ্টি এড়িয়ে টাঙ্গাইল ছেড়ে তার পিতৃভূমি সিরাজগঞ্জে চলে যান। পাকিস্তান বাহিনী তার সন্তোষের বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়।
১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল মাওলানা ভাসানী সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাছে পাকিস্তান বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে বর্বরোচিত অত্যাচার চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মওলানা ভাসানী কলকাতা ছাড়াও দেরাদুন, দিল্লী ও অন্যান্য স্থানে অবস্থান করেন। ভারতে অবস্থানকালে মওলানা ভাসানী দুইবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে দিল্লী অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছিল।
১৯৭৬-এর ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চে নেতৃত্ব দেন। একই বছর ২ অক্টোবর খোদাই খিদমতগার নামে নতুন আর একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬-এর ১৭ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ, তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে মুনাজাত, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ আসাদ পরিষদ দুদিনব্যাপি কর্মসূচি গ্রহন করেছে। জাতীয় গনতান্ত্রিক লীগের পক্ষ থেকে নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনকে বহুতল ভবন নির্মাণ ও মওলানা ভাসানী গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

(ওএস/এইচআর/নভেম্বর ১৭, ২০১৪)