সালথা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথা উপজেলারর গট্টি ইউনিয়নের লক্ষনদিয়া গ্রামের সাথে জুগিডাঙ্গা ও কাঠালবাড়িয়া গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৫ টার দিকে লক্ষনদিয়া, জুগিডাঙ্গা ও কাঠালবাড়িয়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সংঘর্ষকারীরা দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে জুগিডাঙ্গা ও কাঠালবাড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন ও সংঘর্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পর দিন জুগীডাঙ্গা গ্রামের জয়নালের দোকানে ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে লক্ষনদিয়া গ্রামের কয়েক যুবকের সাথে কথা কাটাকাটি হয় জুগীডাঙ্গা ও কাঠালবাড়িয়া গ্রামের যুবকদের সাথে। এই নিয়ে ওইদিন রাতেই মারামারীর ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনার রাতেই উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর এই এলাকায় এসে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে মঙ্গলবার দিন শালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। উভয়পক্ষ তখন সমাধানের বিষয়টি মেনেও নিয়েছিলাম। কিন্তু রবিবার উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা অমান্য করে আবার এই সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো ৪ জন আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা ও কাঠালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা হাবিব মোল্যা গণমাধ্যমকে জানান, গট্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু, বকুল মেম্বার ও নুরুর নেত্বৃতে কয়েক’শ লোক ঢাল সরকি নিয়ে জুগীডাঙ্গা ও কাঠালবাড়িয়া গ্রামে হামলা করে। তারা ৩টি ঘরে আগুন দেয়, ৪ টি গরু, পিয়াজসহ বিভিন্ন বাড়ি থেকে মূল্যবান মালামাল লূট করে নিয়ে যায়। অন্তত ৫ টি বাড়ি ভাংচুর করা হয়। এতে তাদের ৪ জন আহত হয়েছে। তিনি আরো জানান, ক্যারাম খেলা নিয়ে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

তিনি আরো জানান, ঈদের পরেরদিন প্রথম ঘটনা ঘটার পর উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর ওইদিন রাতে আমাদের গ্রামে এসে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে মঙ্গলবার দিন শালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, আমরা মেনেও নিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা অমান্য করে আবার এই হামলা করলো।

এদিকে উত্তেজনা এলাকা শান্ত রাখার বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের চেষ্টার কথা প্রতিপক্ষের লোকজনও স্বীকার করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে গট্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু জানান, হামলার ঘটনা ঘটছে এটা সত্য, কিন্তু এর সাথে আমি জড়িত না, দুই পক্ষই আমার সমর্থক, আমি ঘটনাস্থলে ছিলামও না। তারা ক্ষতিগ্রস্থ লোক, তারা যদি অভিযোগ তুলে আমার দিকে, কি করার আছে আমার।

ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, প্রথম দিন যে ঘটনা ঘটেছিলো, সেদিন রাতেই উপজেলা চেয়ারম্যান এসে আমাকে নিয়ে উভয় গ্রুপের লোকজনের সমর্থন নিয়ে মঙ্গলবারে সমাধান করে দিতে চেয়েছিলো। সবাই রাজিও হয়েছিলো। মঙ্গলবার আসার আগেই উভয় গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষ হামলা করলো।

এই বিষয়ে নগরকান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান শাকিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে, পরবর্তীতে যাতে আর কোন অপৃতিকর পরিস্থিতি না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএন/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৪)