চাঁদপুর প্রতিনিধি : ঈদের দুইদিন আগে উধাও হয়ে গেছে পূবালী ব্যাংক লিঃ চাঁদপুর নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী। যাবার সময় নিয়ে গেছে এক গ্রাহকের ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছে ভোক্তভোগী। আর কোনো গ্রাহকের টাকা নিয়েছে কিনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এদিকে ব্যাংক কর্তপক্ষ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেছে।

জানা গেছে, ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দীর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ঘাগড়া গ্রামে। তিনি স্বপরিবারে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে অনেকে ধারণা করছেন। তিনি চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী পূবালী ব্যাংক চাঁদপুর নতুন বাজার শাখায় সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার এলাকার পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হয় গত ৮ এপ্রিল। ৯ এপ্রিল থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এদিকে আকবর হোসেন লিটন নামের এক গ্রাহকের ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ৮ এপ্রিল ব্যাংকে জামা দেয়ার কথা থাকলেও ওই টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন ওই ব্যাংক ম্যানেজার।

গ্রাহক আকবর হোসেন লিটন বলেন, আমার টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখেছে। তিনি যে চলে যাবেন তা তো আর আমি জানি না। তিনি বৃহস্পতিবার আমাকে টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি আর সেদিন অফিসে আসেন না। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তার সাথে আর দেখা হয়নি। একজন ব্যাংক ম্যানেজারের এমন উধাও হওয়ার খবরে গ্রাহকদের মাঝে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

আকবর হোসেন এর নিকট আত্মীয় অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায় দায়িত্ব না এড়িয়ে যেহেতু কর্মকর্তা তাদের তারা এই বিষয়ে ভূমিকা নিতে পারে। যেভাবে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে সে রকম কার্যক্রম করাই জরুরি। না হলে পূবালী ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। মানুষ আর এ ব্যাংকে ব্যাংকিং করতে চাইবে না। শুধু এ ব্যাংকই নয় টোটাল ব্যাংক খাতেই একটা প্রভাব পড়বে। আস্থাহীনতা তৈরি হবে। যদি ব্যাংক ম্যানেজারই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় তাহলে মানুষ ব্যাংকের প্রতি আস্থা রাখবে কিভাবে ?

এদিকে উধাও হয়ে যাওয়া ব্যাংক ম্যানেজার শ্রীকান্ত নন্দীর জায়গায় নতুন ম্যানেজার দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বর্তমান ম্যানেজার মোঃ হুমায়ুন কবির বলছেন, ওই ম্যানেজার না আসাতে আমাকে এই ব্যাংকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তার সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। ইন্টার্নাল কোনো ধরণের অনিয়ম হয়েছে কিনা তা এখনো বুঝা যাচ্ছে না। তবে ম্যানেজারকে না পাওয়ায় থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করা হয়েছে।

থানায় সাধারণ ডায়েরী করা মোঃ হুমায়ন কবীর বলেন, গত ৪ এপ্রিল বিকাল ৩ টার সময় শ্রীকান্ত নন্দী নতুন বাজারের ব্যাংক কার্যালয় হতে বাহির হয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে তার মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার যোগযোগ করার চেষ্টা করলে নাম্বারটি বন্ধ পাই। আমরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান পাই নাই। পরে বিষয়টি আমাদের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় সাধারণ ডাইরী করেছি। জিডি নং-৫৪০, তারিখ -৯ এপ্রিল।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি শেখ মোঃ মুহসীন আলম বলেন, আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শ্রীকান্ত নন্দীকে খুঁজে পেতে আইনগত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

এ অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনো নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে।

(ইউএইচ/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৪)