পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুরে ভারতীয় ভিসার অনলাইনে ই-টোকেন (ভিসা প্রাপ্তির আবেদনপত্র জমা দেয়ার তারিখসহ) টাকা দিলেই সহজে পাওয়া যায়। জেলার দি রয়েল সাইবার ক্যাফেসহ বেশ কয়েকজন দালাল ভিসা প্রত্যাশীদের হয়রানি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিনামূল্যের ই-টোকেনের বাণিজ্য করে সংঘবদ্ধ ওই দালাল চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা।

বাংলাদেশী নাগরিকদের সহজে ভিসা পাওয়ার জন্যে ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ই-টোকেন দেয়ার ব্যবস্থা করলেও তা এখন কঠিন হয়ে গেছে মনে করছেন ভিসা প্রত্যাশীরা। চিকিৎসা, ভ্রমণ ও আত্মীয়তার কারণে যারা ভারতে যেতে চান তাদের দফায় দফায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বিধি মোতাবেক বিনামূল্যে ই টোকেন পাওয়ার কথা থাকলেও সংঘবদ্ধ একটি চক্র টোকেনপ্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে সমীর কুমার দাস জানান, দালাল চক্রের অপতৎপরতা না থাকলে ই টোকেন এত ঝামেলা থাকতো না। যেহেতু দুই তিন হাজার টাকা খরচ না করলে ভিসা পেতে জটিলতার সৃষ্টি হয় সে কারণে আমরা বাধ্য হয়ে টাকা দেই। পিরোজপুর আফতাব উদ্দিন কলেজের শিক্ষক অলোক কুমার কর্মকার বলেন, পূজার ছুটির সময় স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে চেয়েছিলাম। এ জন্য দ্রুত ভিসা পাওয়ার উদ্দেশে একটি দালাল চক্রকে ৭ হাজার টাকা দেই। কিন্তু সে ভিসা তো দেয়ইনি, উল্টো টাকা তুলতেও হিমসিম খেতে হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী দালাল চক্র রয়েছে তৎপর। যাদের নাম প্রকাশ করা যায় না। এদের মাধ্যমে না গেলে ভিসা পাওয়া দুস্কর হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে এদের মাধ্যমে ভারতীয় ভিসার ই টোকেন সংগ্রহ করতে হয়।

এ ব্যাপারে রয়েল সাইবার ক্যাফের মালিক মো. জাকির হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সহজে কাজ করে দেই। মানুষ আসে তাই মানুষকে সাহায্য করি। জোর করে কাউকে কিছু চাপিয়ে তো দিচ্ছি না। তবে বনানী দাস বলেন, আমি দুইবার ভারতে গিয়েছিলাম। সঠিক পথে ই টোকেন পাওয়া সহজ নয়। দালাল ধরেছিলাম। তাই প্রক্রিয়াটি সহজ হয়েছে। টাকার বিনিময় ই-টোকেন সংগ্রহ এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। কিন্তু কবির হোসেন বললেন ভিন্ন কথা। তিনি জানালেন, আমার ছেলের ডান কানের পাশে বড় আকারের টিউমার হওয়ায় ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। আমি মধ্যবিত্ত মানুষ । ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানো আর ভারতে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই এখানেই ছেলের চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধর্ণা দিয়ে এ টুকুন বুঝেছি, টাকা ছাড়া ভারতীয় ভিসার জন্য ই টোকেন পাওয়া সম্ভব নয়। ই টোকেন না পেয়ে মুমূর্ষ রোগী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণীপেশার হাজার হাজার মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। ই-টোকেন না পেয়ে জরুরি প্রয়োজনে অবৈধ পথে ভারতে পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে ।

(এসএ/এএস/নভেম্বর ১৭, ২০১৪)