আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা : ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের হওয়া মামলা বুধবার খারিজ করেছেন দেশটির একটি কেন্দ্রীয় আদালত।

আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, আদালতের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোবরাগাড়ের আইনজীবী।

বিচারক তার রুলে বলেন, খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে অভিযোগ গঠনের সময় তার কূটনৈতিক দায়মুক্তির সুযোগ ছিল। তাই তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি খারিজ করা হয়েছে। আদালতের এই আদেশের পর মার্কিন সরকার নতুন করে খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারবেন। তবে মার্কিন অ্যাটর্নির দপ্তর এ বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।

গৃহকর্মীর ভিসা আবেদনে মজুরি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং তাকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দিয়ে বেশি কাজ করানোর অভিযোগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটের তত্কালীন ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। ভারত দেবযানীর কূটনৈতিক দায়মুক্তি বা ছাড়ের দাবি পরিত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এরই প্রেক্ষাপটে মার্কিন ফেডারেল আদালতের গ্র্যান্ড জুরি দেবযানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরে তাকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেয় মার্কিন সরকার। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন খোবরাগাড়ে।

দেবযানীর বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে দুটি অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ দুটি হচ্ছে, ভারত থেকে নিয়ে যাওয়া নিজ গৃহকর্মী সংগীতা রিচার্ডের বেতনের ব্যাপারে ভুয়া তথ্য দেওয়া ও ভিসা জালিয়াতি করা। গ্রেপ্তারকালে প্রকাশ্যে তাকে হাতকড়া পরানো হয়। সাধারণ অপরাধীদের মতো তাকে বিবস্ত্র করে তল্লাশিও করা হয়। তবে দেবযানী কোনো ধরনের অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করেন। তাকে ‘হেনস্তা’ করার ঘটনায় ভারতজুড়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানায়। কিন্তু ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, দেবযানীকে বিচারের মুখোমুখি করার ব্যাপারে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এর জের ধরে দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক তিক্ততার সৃষ্টি হয়। দুই দেশের সম্পর্কের এতটাই অবনতি হয় যে, দেবযানীকে গ্রেপ্তারের ঘটনার পরপরই দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

(ওএস/এইচআর/মার্চ ১৩, ২০১৪)