সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : শিল্পকলায়, সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য লোকজ সংস্কৃতির চারণ ভূমি রত্নগর্ভা কেন্দুয়ার কৃতী সন্তান আত্মসন্ধানী মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খা মরণোত্তর একুশে পদক ২০২৪ লাভ করেছেন। ইতিহাসের এই মাহেন্দ্র অধ্যায়কে সার্বজনীন ভাবে সারা বাংলাদেশ তথা বিশ্বব্যাপী সাহিত্য সংস্কৃতির পরিমন্ডলে চড়িয়ে দিতে কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৩দিন ব্যাপী বাউল জালাল মেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। আত্মসন্ধানী ও মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খা’র ১৩০ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে জালাল মেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়।


কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে ২৫, ২৬ ও ২৭ এপ্রিল ৩ দিনব্যাপী মেলায় দেশ বরেন্য লোক সংস্কৃতি গবেষকদের অংশ গ্রহণে আলোচনা, জাতীয় ও স্থানীয় বাউল শিল্পীদের জালাল গীতি পরিবেশনা, মঞ্চ নাকট মানুষও রতন, গ্রামীন মেলা, পুতুল নাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বর্ণীল এ আয়োজকে স্বরণীয় করে রাখতে “ভাব তরঙ্গ” শিরনামে একটি স্মরণীকা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। জালাল মেলার ৩ দিনের এ আয়োজনকে জাতীয় ও আন্তজার্তিক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার আহব্বান জানিয়েন জালাল মেলার উদযাপন কমিটির আহব্বায়ন ও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার।

বুধবার বেলা ৩টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তিনি বলেন, জালাল আমাদের গর্ব, অহংকার। তার গান ও সৃষ্টি কর্ম সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সহযোগীতা চাই। তিনি সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে অনুষ্ঠিতব্য জালাল মেলার পতাকা তুলে অংশ গ্রহণ ও নানাভাবে সহযোগিতা করে লোকজ সংস্কৃতির প্রসার ও বিকাশের মূল্যবান অংশীদার হবার জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও গীতিকার কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো নুরুল ইসলাম, কেন্দুয়া থানার ওসি মো: এনামুল হক পিপিএম।

উল্লেখ্য ১৮৯৪ সালের ২৫ এপ্রিল নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার আসদাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জালাল উদ্দীন খা। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তিনি ১৯৭২ সালের ৩১ শে জুলাই আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহের গাও গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হন। তার রচিত “জালাল গীতি” পঞ্চম খন্ড প্রকাশিত হয়েছে। বুুদ্ধিজীবী ও গবেষক স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার “জালাল গীতি” সমগ্র সম্পাদনা করেছেন। এতে জালাল জালাল উদ্দিন খা রচিত দেহতত্ত্ব, আত্মতত্ত্ব, পরমতত্ত্বের ৪শটিরও বেশি গান প্রকাশিত হয়েছে। ৩দিন ব্যাপী মেলার আয়োজনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরধার করা হচ্ছে। এ মেলাকে কেন্দ্র করে বাউল ও সংস্কৃতি সেবিদের মাঝে বইছে আনন্দধারা।

(এসবিএস/এএস/এপ্রিল ২৪, ২০২৪)