শোভন সাহা, সুন্দরবন থেকে ফিরে : ‘ভোলা নদী’ উত্তর দিক থেকে এসে ধনুকের মতো বাঁক নিয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বলেশ্বরে গিয়ে মিশেছে। শরণখোলায় ভোলার এই বাঁক থেকে বলেশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে বগি খাল। এতে তৈরি হয়েছে বিশাল আকারের বদ্বীপ। যার আয়তন প্রায় ৩০ হাজার একর।

ঘন অরণ্যে ঢাকা এই বদ্বীপে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলি। হরহামেশাই মিলবে চিত্রা হরিণের সাক্ষাৎ।এমনকি খুব কাছ থেকে বাঘের সাক্ষাৎ পাওয়ার ঘটনা নাকি বিরল নয়। এমনটাই দাবি করেছেন সুন্দরবন বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশনের কর্মকর্তারা।

তিনি জানান, এই গরমের তীব্রতা থেকে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ার বিকল্প কিছুই হতে পারেনা। তাই এই গরমেও ঘুরে আসতে পারেন আমাদের বনবাস ইকো পার্ক থেকে। চারিদিকে পর্যাপ্ত পরিমান গাছগাছালি থাকার ফলে আমাদের রিসোর্ট তুলনামূলক শীতলই থাকে। গাছতলায় বসে বসে অভিজ্ঞতা নিবেন এই তীব্র গরমেও কিভাবে ঠান্ডা অনুভব করা যায় (প্রাকৃতিক এসি)। এছাড়াও রয়েছে আমাদের এসি প্রিমিয়াম ভিলা যেখানে আপনি পাবেন শীতল আবহাওয়া আর আনলিমিটেড ভিউ তো থাকছেই। আপনার রুমেই চলে আসবে খাবার। এসি অন করে খাবেন আর ঘুমাবেন।
তাই দেরি না করে এখনি বুক করে ফেলুন আপনার রুম। রুম বুকিং এর সাথে পাচ্ছেন একটি কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট।

খেয়া ঘাটে এলেই আপনি রোমাঞ্চিত হতে বাধ্য। এপার থেকেই দৃষ্টিগোচর হবে ঘন কেওড়া, সুন্দরী বৃক্ষের সমারোহ। কানে এসে ধ্বনিত হবে ঘু-ঘু পাখির বিরামহীন ডাক, শালিকের কলকাকলি। টিয়ের দূরন্তপনা। দেখতে পাবেন লবণাক্ত পানির দুর্লভ প্রজাতির ভোঁদড়ের ঝাঁকের আয়েশী বিশ্রাম।

চোখে পড়বে উদবিড়ালের কসরত। সঙ্গে বানরের বাদরামীতো থাকছেই। আরও রয়েছে নাম না জানা অনেক প্রজাতির পাখির ডাক।

শরণখোলা রেঞ্জের এ কম্পার্টমেন্টের বন বিভাগের বেশ কিছু অফিস রয়েছে। মিঠাপানির পুকুর রয়েছে দু’টি রয়েছে মসজিদও। বগি খালের ঘাট থেকে একটি ইট বিছানো পায়ে হাঁটার সোজা চলে গছে দক্ষিণ দিকে বনের ভেতরে। সেই পথ ধরে হাঁটলেই সামনে সুন্দরী বৃক্ষ আপনাকে স্বাগত জানাবে।

বনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আজকাল জঙ্গলের ভেতরে রাতযাপন করেন অনেকে। বনবাসে যাবার সুপ্ত বাসনা মনের গহীনে নেই, এমন মানুষ পাওয়া ভার! এই চিন্তা থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সুন্দরবনের জঙ্গল উপভোগের এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জঙ্গলে রাতযাপনের জন্য করা ঘরগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বনবাস’। নিরাপদ খোলামেলা বারান্দায় বসে কিংবা হ্যামক বা দোলনায় দোল খেতে খেতে সুন্দরবনের অপার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ। বানর, হরিণ, মেছো বাঘ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, জলজ্যান্ত কুমির দেখা, কখনও বা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হুংকার শুনে ছমছমে অনুভূতিতে ভাসতে বনবাস প্রস্তুত।

বনবাসের স্বত্বাধিকারী মো: আসলামের সাথে কথা বললে তিনি আমাদের জানান, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরিসীম। আমাদের দেশর এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমগ্র পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে হবে। আপনারা নিজেরা সবাই আসেন ঘুরে দেখেন পরিচিত লোকজনদের আসতে বলেন। আমরা এখন অনেকে টাকা খরচ করে বিদেশে যাচ্ছি, কিন্তু দেশে অল্প টাকায় অনেক ভালো ঘোরার স্থান রয়েছে।

তিনি আরো জানান, আমাদের এই রিসোর্টে আছে ভালো মানের আবাসিক সিস্টম নরমাল রুম, এসি রুম, ডুপ্লেক্স রুম। ভাড়া বেশ সাধ্যের মধ্যে, গোলপাতার সরাইখানা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই ভালো।

(এসএস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২৪)