শরীয়তপুর প্রতিনিধি :শরীয়তপুরের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণ এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে।

জেলার ডামুড্যা উপজেলার সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ফি ক্ষেত্র বিশেষ ৫ গুনেরও বেশী নেয়া হচ্ছে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ১ শত টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৪৪ টি দাখিল মাদ্রাসা থেকে অন্তত সাড়ে দশ হাজার শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। শরীয়তপুরের বেশীর ভাগ শিক্ষার্থীরাই দরিদ্র।

বিভিন্ন সময়ে দেশের সর্বত্র এসএসসিতে অধিক হারে ফি আদায়ের কারনে সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে ১ হাজার ৪ শত টাকার অধিক ফি আদায় না করতে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করেই শরীয়তপুরের স্কুল গুলোতে নির্ধারিত ফির কয়েকগুন বেশী টাকা আদায়করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলার সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে ৪ গুণ অর্থাৎ ৪ হাজার থেকে ১২ হাজার পর্যন্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়টি সংবাদকর্মীরা জানতে পারলে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের লোকজন তাদের মুখ খুলতে বারণ করে দেয়।
এই বিদ্যালয়ে ৪৬ জন শিক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরন বাবদ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এর মধ্যে ১২ জন শিক্ষার্থীকে নির্বচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যের অজুহাত দেখিয়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র চেয়েও ৪ গুণ ফি আদায় করে। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের লোকজন আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বকাঝকা ও একজনকে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করেছে। এক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরনে আমরা ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা নিয়ে শংকিত।

এদিকে জেলার গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী লামিয়া আক্তারের বাবা ফারুখ ঘরামী বলেন, আমার মেয়ের পরীক্ষার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার টাকা দাবি করেছিল। আমি ৩ হাজার ৪ শত টাকার বেশী পরিশোধ করতে পারিনি।

সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় ও নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তোতা বলেন, এ ঘটনাটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা ফরম পূরনে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টাকা নিচ্ছি। কোন শিক্ষার্থীর উপর অবিচার করা হয়নি।

শরীয়তপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নলীনি রঞ্জন রায় বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে যে সকল প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ফি আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
(কেএনআই/এসসি/নভেম্বর১৮,২০১৪)