তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ জন নিহতের ঘটনার পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অসংখ্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টহল অব্যাহত রেখেছে। রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটও। এছাড়া বিজিবি ও মোতায়েন করা হয়েছে ওই এলাকায়। এদিকে মঙ্গলবার রাতে গুলিতে আহতদের মধ্যে লিমন ভূঁইয়াকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। বাকী ৫ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি)মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেছেন পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চন্দ্রদিঘলিয়া উচ্চবিদ্যালয়-এর সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সময় বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ভাঙচুর হয়। চা খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এক পক্ষ গুলি চালালে ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়।তাদেরকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে ওসিকুর ভূইয়াকে কর্তব্যরতঃ চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

অন্যদিকে, চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের হাজার হাজার লোক জেলা শহরে আজ বুধবার দুপুরে নিহত যুবকের হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে শোক র‌্যালী করেছে। র‌্যালীটি বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠ থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রথান সড়ক প্রদক্ষিন করে।

দুপুর ১ টায় গোপালগঞ্জ শহরের চেচানিয়াকান্দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। দুপুর ২ টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেন।

এসময় অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম কাকন, উপ প্রচার সম্পাদক শিমুল চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএম লিয়াকত আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি শেখ সাহবুদ্দিন হিটু, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জায়েদ মাহামুদ বাপ্পী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা প্রমূখ।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তার সম্পাদক ইলিয়াস হক বলেন, যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা অত্যান্ত ন্যাক্কার জনক। এ হত্যা কান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। সেহেতু জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আমাদের আসস্ত করেছেন তাই আমরা সাময়িক ভাবে অবরোধ তুলে নিয়েছি। আমরা প্রতাশা করছি প্রশাসন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করবে।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা বলেন, আমার ইতিমধ্য হত্যার তদন্ত কাজ শুরু করেছি। অবরোধকারীদে সাথে আমরা কথা বলে তাদের আশ্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তি পূর্ণ হয়েছে এবং স্বচ্ছ ভাবে ফলাফলা ঘোষণা করা হয়েছে। দুই প্রার্থী মধ্যে ভোটের ব্যবধান কম ছিলো। আমাদের দেশে একটা কালচার আছে নির্বাচনে পরাজিত হলে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন তোলা হয়। জেলার সার্বিক আইন শৃংখলা ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ব্যাটেলিয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক। অবৈধ কোন অস্ত্র ব্যবহার হলে তা উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যহত থাকবে।

(টিবি/এসপি/মে ১৫, ২০২৪)