নওগাঁ  প্রতিনিধি : নওগাঁর সীমান্তবর্তী ধামইরহাট উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এবার অত্র উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের দাম আশানূরুপ হওয়ায় কৃষকের মুখেদেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক । বুধবার উপজেলার একটি প্রদর্শণী ক্ষেতের রোপা আমন ধান কাটার উদ্বোধন করেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. জামাল উদ্দিন।

ধামইরহাট উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়। সঠিক সময়ে সেচ ও বৃষ্টির পানি, সঠিক পরিচর্যা ও সার কীটনাশকের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ধান গাছগুলো লকলকে ও তরতাজায় পরিণত হয়েছিল। অধিকাংশ জমিতে সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ধান রোপন করে কৃষকরা। এছাড়া ব্রিধান-৪৭, ৪৯, ৬২, বিনা-৭, স্বর্ণা-৫, ত্বরা স্বর্ণা জাতের ধান রোপন করেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধান গাছে রোগ বালাই কম এবং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রম এবং কৃষকদের বিভিন্ন সতর্কতা মুলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়ায় রোগ বালাই তেমন একটা ছিল না বললেই চলে। বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র ধান কাটা-মাড়াই কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। কৃষকরা এবার ফলন বেশি পেয়ে বেশ খুশি খুশি ভাব লক্ষ্য করা গেছে।

উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের ব্রজবন গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন বলেন, তার জমিতে জিরাশাইল ধান একর প্রতি প্রায় ৬০-৬৫ মণ হারে ফলন হয়েছে। নেউটা গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন ও শিবলী বলেন, তাদের এলাকায় অধিকাংশ জমিতে স্বর্ণা-৫ ধান রোপন করা হয়েছে। একর প্রতি প্রায় ৫৫-৬০ মন (৪০ কেজি) হারে ফলন হয়েছে। হাটনগর গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ ও মালাহার গ্রামের কৃষক বদিউল আলম ও আগ্রাদ্বিগুন গ্রামের কৃষক নুরন্নবী বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে এবং বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হয়েছে। বর্তমানে ধামইরহাটের সর্বত্র আমন ধান কেনা বেচা শুরু হয়েছে। প্রতি মণ ধান বাজারে প্রকার ভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ৮২০ টাকা মন (৪০ কেজি) দরে কেনা বেচা চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড.জামাল উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া অনুকূল ও ধান গাছকে রোগ বালাই থেকে রক্ষার জন্য কৃষকদের আগাম সর্তকতা হিসেবে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এর সুফল কৃষকরা পেয়েছে। রোগ বালাই তেমন ছিল না বললেই চলে। সঠিক সময়ে পোকা মাকড় দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া রাতে প্রচন্ড শীত ও দিনে রোদের তেজ বেশি থাকায় পোকা মাড়কের আক্রমণ নেই বললেই চলে। উপরোন্ত গত সেপ্টেম্বর মাসে মাঝারী আকারে বন্যা এই উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জমিতে অধিক পলি পড়ার কারণে ধান গাছের তেজি ভাব লক্ষ্য করা গেছে। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না থাকায় এ উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে। হেক্ট্র প্রতি প্রায় সাড়ে ৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে বলে জানান তিনি।

(বিএম/এএস/নভেম্বর ১৯, ২০১৪)