মো. আতিকুর রহমান : খবরের পাতা খুললেই নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের পরে হত্যা অথবা গুম, যৌতুকের বলি, এসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ, নারী পাচার, পতিতাবৃত্তি, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নানামুখি অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা যেন প্রতিদিনের স্বাভাবিক খবরে পরিনত হয়েছে। সম্প্রতি চিকিৎসক শামারুখ মাহজাবিনের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে প্রতিটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।

এমন মৃত্যু কারো জন্যই কাম্য নয়। দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিদিনই কোন না কোন নারী মানুষরূপি ঐসব নরপশুদের হাতে নিযার্তিত হচ্ছে। নিযার্তিতদের মধ্যে কেউবা প্রতিকারে আইনের আশ্রয় নিলেও অনেকেই অর্থ, শক্তি ও সামর্থ না থাকায় এবং পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অন্যায়ের প্রতিবাদ ও আইনের আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকছে, যা দুঃখজনক। অনেকে আবার এধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় ও কোর্টে যাওয়াকে মানহানীকর ও চোক্ষুলজ্জা ভয় মনে করছে।

ফলে অনেকেই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিযার্তিত নারীর অভিভাবকদের যৎসামান্য অর্থ দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, প্রভাবশালী, রাজনীতিকবিদ বা গ্রামের পঞ্চায়েত, কমিশনার ও মাতব্বরদের দ্বারা অপরাধীরা অতি সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। ফলে বিশেষ করে এই সমাজে ঐসব বিকৃত ও নারী মাংসলোভী নরপশুদের অপরাধের মাত্রা দিনদিন উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সমাজে ঐসব অপরাধীদের অপরাধের মাত্রা এতই ভয়াবহ ও নির্মম পর্যায়ে উপনিত হচ্ছে যে, নিজের অপকর্ম ও অপরাধ ঢাকতে নিযার্তিত অসহায়া নারী, শিশু, বালিকা অথবা কিশোরীকে হত্যা করতেও কুন্ঠাবোধ করছে না, যা অধিক ভীতির কারণ বলে মনে করি। এই ধরনের নিষ্ঠুর ও ববর্র ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বসাধারণের ভিতরে মানবিক মূল্যবোধ, দৃর্ষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, মানুষের প্রতি মানুষের অধিক ভালোবাসা যেমন জাগ্রত করতে হবে, ঠিক তেমনি অপরাধীদের এই ধরনের অপরাধ কর্ম থেকে নিবৃত করতে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অপরাধী যেই হোন না কেন তাদেরকে আইনের হাতে সোর্পদ করতে হবে এবং দ্রুততার সঙ্গে বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সমাজে ঐসব অপরাধীদের কোন আশ্রয়স্থল না থাকে। সেক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীদের ন্যায় বিচারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট মহলের অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে, পরিবারের পক্ষ থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং প্রয়োজনে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেন কোন নির্যাতিত নারীর ন্যায় বিচারের বিপরীতে অর্থের কাছে নতস্বীকার করতে না হয়।

বর্তমান সমাজে ভদ্র রুপি শিক্ষিত বা অশিক্ষিত হিংস্র নরপশুদের নির্যাতন শুধু গ্রামাঞ্চলেই নয়, শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে। এই জঘন্য ও ঘৃন্য কালিমায় প্রতিদিনই কোন না কোন নারীকে অকালেই প্রাণ দিতে হচ্ছে। আবার কাউকে হয়তো এই ধরনের নির্যাতন প্রতিনিয়ত মৃর্ত্যুর মতো যন্ত্রণা দিচ্ছে ও তাদের হৃদয়ের রঙিন স্বপ্নগুলোকে বিলীন করছে। কত নারীর নীরব কান্না ও দীর্ঘশ্বাস বাতাসকে ভারি করছে এবং কত পরিবার বিপর্যয়ের কবলে পড়ছে এর খবর আমরা আর কয়জনই বা রাখি? অনেকে আবার নির্যাতিত মেয়েকে নিয়ে ন্যায় বিচারের বিপরীতে সমাজে হেয় প্রতিপন্য ও নানাবিধ হয়রানির স্বীকার হচ্ছে, যা দুঃখজনক। বর্তমান সমাজে নারী নির্যাতনের ববর্রতা যেভাবে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পরছে, বিপরীতে বিকৃত রুচির নারী লোভী শকুনরা উক্ত অপকর্মের শাস্তি ভোগের বিপরীতে অর্থ ও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে পরছে, যা ভীতিকর। ফলে এই ধরনের অপরাধীরা আবারও সমাজ দেহে নারীর উপর দৃষ্টক্ষতের মতো মারাত্মক ভাবে বিস্তার লাভ করছে। যা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিরোধ করা অধিক জরুরী।

যদিও এই কথাটি সত্য, বর্তমানে এদেশে দারিদ্রক্লিষ্ট জনজীবনে নারী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি অহরহ দেখা যাচ্ছে। যা সমাজে একধরনের অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি করছে। ফলে এ সমাজে প্রতিনিয়ত বিবাহ বিচ্ছেদ, আত্মহত্যা, পতিতাবৃত্তি, বহুবিবাহের মতো এমন অনেক তীব্র সামাজিক অবক্ষয়ের জন্ম দিচ্ছে। যদিও এই সমাজে নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার রক্ষায় ভিন্ন ভিন্ন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং আইনে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রাখা আছে। কিন্তু কোথায় যেন এর ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা এখনও নারীদের সামাজিক অবস্থা এবং তাদের পারিবারিক পরিস্থিতি বাস্তবে খুব একটা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়নি। আমরা শুধু মুখেই নারীদের স্বাধীনতার কথা বলছি কিন্তু বাস্তবে করছি এর পুরো উল্টো কাজটি। যা নারীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করি। সেইসঙ্গে এ যাবৎকাল এদেশের নারী সমাজের জন্য যেসব আইন গৃহীত হয়েছে তার কোনটিই এখন পর্যন্ত তেমন সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। কেননা আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কর্তৃত্ব যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে আইনের নানা ধরনের ফাঁকফোকর, অনিয়ম ও সংশ্লিষ্ট অনেকের নীতিহীনতা। এরই সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে নারী সমাজের অজ্ঞতা, দারিদ্র্যতা, অশিক্ষা, অসচেতনতা, ক্ষমতাহীনতা, আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা, ঘুষবাণিজ্য, কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য, অধিক চোক্ষুলজ্জা, উচ্চমহলের অবৈধ হস্তক্ষেপ, ন্যায়বিচারের বিপরীতে হয়রানি হবার অশঙ্কা, সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি, সকলক্ষেত্রে পুরুষদের অধিক প্রাধান্যসহ নানাবিধ সমস্যা। ফলে দিন দিন এ সমাজে বেড়েই চলেছে নারী নির্যাতনের মতো নির্মম ঘটনা।

এইরূপ পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, এই সমাজের নারীদেরকে আরো অধিক স্বাবলম্বি, শিক্ষিত ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ করার মতো শক্তি ও সামর্থ উভয়ই অর্জন করতে হবে। অন্যায় সাথে কোন প্রকার আপোষ করা থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে। আইনের শাসন বাস্তবায়নে সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ঘুষবাণিজ্য, আইনজীবিদের অনৈতিক চর্চা এবং অবৈধ্য অর্থপ্রাপ্তির প্রবণতা থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ধরনের অপরাধে আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে অবশ্যই তদন্তকারী কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে হবে। সেইসঙ্গে এধরনের তদন্ত কাজ সঠিক ও দ্রুততার সাথে শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের সচেষ্ট ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভুল তথ্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মামলার কার্য সম্পন্ন করতে আদেশমূলক বিধান রাখতে হবে এবং মামলা পরিচালনায় অহেতুক সময়ক্ষেপন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিতির ব্যাপারে সরকার কুশলীদের যথাযথ ভুমিকা পালন ও উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সামাজিক আন্দোলন এবং তা বাস্তবায়নে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি অপরাধীদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে অপরাধীদের চিহিৃত করে বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজ থেকে এই ধরনের অপরাধ উৎপাটন করতে নারীকর্মী সংস্থা, মানবাধিকার কমিশন, আইনজীবি, স্থানীয় প্রশাসন, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ, লেখক, সাংবাদিক, কলামিষ্টসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে এবং এই ধরনের ঘৃন্য অপরাধের কালিমাকে সমাজ তথা দেশ থেকে মুছে ফেলতে হবে। কেননা সরকার ও প্রশাসনের একার পক্ষে আইন করে এই ধরনের অপরাধ সমাজ তথা দেশ থেকে নির্মূল করা সম্ভব নয়, যদি না এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব না হয়। আর যদি আমরা এই কাজে ব্যর্থ হই তবে এর পরিনাম হবে আরো ভয়াবহ ও নির্মম । যার খেশারত তখন হয়তো সকলকে দিতে হবে। তাই সমাজে এই শ্রেণী অপরাধীদের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাটাকে বর্তমানে অধিক জরুরী বলে মনে করি।

এই সমাজে কবে ঐসব ঘৃন্য পাপীরা তাদের কুকর্ম থেকে বেড়িয়ে আসবে? কবে তাদের হৃদয়ে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভবুদ্ধির উদায় হবে এবং নারী নির্যাতনের ঘৃন্য অপকর্মের কালিমা থেকে দেশ তথা সমাজ মুক্তি পাবে? যদিও তাদের জানা উচিত ‘নারী’ ও ‘মা’ জাতির প্রতি তাদের এই ধরনের আচারণ মূলত: নিষ্ঠুর মানুষের বর্হিপ্রকাশ মাত্র। তারা কখন ভাবে না এই নারী জাতির বদলতেই তারা এই পৃথিবীর আলো বাতাস দেখতে সক্ষম হচ্ছে। সেই ‘মা’ তথা ‘নারী’ জাতির প্রতি তাদের পশুসুলভ আচরণ কখনই মেনে নেওয়া যায় না। ভাবতে অবাক লাগে, আধুনিক সভ্যতার এ যুগেও সমাজ জীবনে এখনও নারী জাতিকে নির্মম ও ববর্র ঘটনার স্বীকার হতে হচ্ছে। যদিও এর শিকড় মূলত আমাদের সামাজিক ইতিহাসের সুগভীর অন্ধকারে প্রোথিত। যেমন-পূর্বে আরব দেশে জাহেলিয়াত যুগে কন্যা শিশুকে জন্মের পরই জ্যান্ত কবর দেয়া হতো। প্রাচীন ভারতে বিধবাদের স্বামীর মৃত্যুর সঙ্গে চিতায় পুড়িয়ে মারা হতো। মধ্যযুগে রাজসভায় নারীরা ছিল রাজা বাদশাদের মনোরঞ্জনের বস্তু। কিন্তু সেই দিনতো আমরা অনেক আগেই পাড়ি দিয়ে এসেছি। আমরা এখন সভ্য সমাজের সভ্য জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। নারী-পুরুষ কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করছি। কিন্তু বিপরিতে আমরা এখন পির্তৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সেই আদিম গোড়ামি থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি? যা আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ও নারীর প্রতি মমতা ও শ্রদ্ধাবোধকে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করছে। এই অবস্থা থেকে যতদ্রুত সম্ভব সকলের পরিত্রান পাওয়া জরুরী।

আজ বিশ্বে যখন নারী-পুরুষ একযোগে সমঅধিকারের ভিত্তিতে সমাজ ও দেশের জন্য বিরাট ভূমিকা রাখছে। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী ও শিক্ষা দিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশের নারীরা এখনও সেই অবস্থায় পৌঁছাতে পারছে না, বরং পদে পদে আরো নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। পরিবার থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে তারা আজও নিরাপদ নয়। আজও তারা পুরোপুরি কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোড়ামির বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। যদিও বর্তমানে এদেশের নারী সংগঠনগুলি নারীর অধিকার পুন:প্রতিষ্ঠিত কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু সকলের সার্বিক সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা এর সুফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা দুঃখজনক। কেননা আমরা এখনও নারী ও পুরুষের সমঅধিকার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি। নারীদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান, উপযুক্ত শিক্ষা, অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ, সিন্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যথাযথ মূল্যায়ন, ভুমি ব্যবস্থায় সমতার অধিকার, লিঙ্গভিত্তিক যথাযথ শ্রম বিভাজন ও বৈষম্য রোধ, পণ্য হিসেবে নারীর উপস্থাপন রোধসহ পির্তৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা থেকে নারীরা এখন পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়নি। এর ফলে সমাজে আজও নারীরা নিস্পেষিত হচ্ছে। যা কিনা মানবাধিকার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

যদিও এ কথাটি সত্য, শুধু আইন প্রয়োগ করে এই ধরনের নির্যাতন থেকে নারীদের মুক্তি করা সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি পুরুষদের দৃর্ষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, আইনের কঠোর প্রয়োগ ও অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি বাস্তবায়ন, সমাজে নারীদের মর্যাদা দান, নারীদের অধিক কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ, পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় গোড়ামী রোধ, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোড়দারকরণ, অসহায়া নারীদেরকে আইনি সহযোগিতা প্রদান সেইসঙ্গে নারীদের মাঝে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধসহ সম্মিলিত ভাবে নারী নির্যাতন বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে সমাজে নারী নির্যাতনের এরূপ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও আমরা রেহাই পাবো। এই কাজে বিশেষ করে নারীদের প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা আগে জাগ্রত করতে হবে এবং নিজ নিজ পরিবার থেকে এই কাজটি শুরু করতে হবে। মূলত: কথায় না, কাজের মাধ্যমে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমঅধিকার বাস্তবায়নে সকলে আরো আন্তরিক হবো। যা হয়তো বা নারী নির্যাতনের মতো ঘৃন্য অপকর্মের কালিমা থেকে দেশ তথা সমাজকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে সক্ষম হবে। সকলের মাঝে সেই সদিচ্ছা জাগ্রত হোক, জাতি এমনটিই প্রত্যাশা করে।

লেখক : কলামিষ্ট