কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :বৃহস্পতিবার ১৫ মিনিটের জন্য থমকে দাড়িয়ে ছিলো পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ২০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।

ছয় বছরের শিশু সুমিকে ছয় টুকরো করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে প্রায় ৩৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা দুপুর ১২টায় একযোগে ক্লাসের পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও নিরব প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে।

কলাপাড়া পৌর শহরের মঙ্গলসুখ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সুমির আত্মারশান্তি ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হোসেন। এ সময় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ অলি আমিন, ফোরকানুল ইসলাম, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী মনিরুল ইসলাম, গাজী নিজাম উদ্দিন,নিহত সুমির পিতা হামিদ মৃধাসহ স্কুলের শিক্ষক,ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

কলাপাড়ার নিজামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্রী সুমিকে গত ৪ নভেম্বর সন্ধায় ছয় টুকরো করে হত্যা করে লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে। ওইদিন রাতেই পুলিশ নিহতের খন্ডবিখন্ড লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৫ নভেম্বর নিহত সুমির পিতা হামিদ মৃধা একই এলাকার খলিল পাহোলান তার ভাই জলিল পাহোলান ও আলী আহমেদ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতে আলী আহমেদকে গ্রেফতার করলেও ঘটনার ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও মূল আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে সুমি হত্যাকারীদের শান্তির দাবিতে ফুঁসে উঠছে সমগ্র উপকূল। কলাপাড়ায় বর্বরতম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠাসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মীরা ছুটে আসছেন কলাপাড়া সুমিদের বাড়িতে। কিন্তু প্রশাসন এখনও মামলার মূল আসামীকে গ্রেফতার করতে পারছে না।

সুমির পিতা হামিদ মৃধা জানায়,“ আর কতো শিশু এভাবে টুকরো টুকরো হলে আসামীরা ধরা পড়বে। তার মতো যেন কোন বাবা তার সন্তানের এভাবে খন্ড খন্ড দেহ দেখতে না হয়”।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, সুমি হত্যার ঘটনায় কলাপাড়ার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আজ ১৫ মিনিটের জন্য ক্লাসের পাঠদান বন্ধ রেখে এ প্রতিবাদ জানায়। তাদের আশা খুব দ্রুতই হত্যাকারীরা ধরা পড়বে।

সুমি হত্যা কারীরা অবিলম্বে গ্রেফতার না হলে আরও বৃহৎ কর্মসূচী পালন করা হবে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান জানান, সুমি হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আলী আহমেদ তাদের কাছে শিকার করেছে খলিলই সুমিকে হত্যা করেছে।

ঘটনার পর পরিস্থিতি দেখার জন্য তাকে ঘটনাস্থলে পাঠায় খলিল। কিন্তু সে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।



(এমকেআর/এসসি/নভেম্বর২১,২০১৪)