লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার অনেক স্থানে এখন পুকুর, খাল, বিল ও ডোবা সেচে মাছ ধরছে। আগষ্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চলে এ প্রক্রিয়ায় নিধন। এতে মাছের প্রজাতি বিন্যাসের আশংকা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী, বিল ও খালের মতো মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করা অতি জরুরি। নচেৎ হারিয়ে যাবে প্রাকৃতিক উৎসের মাছ। বিপন্ন হবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের মৎস্য জাদুঘর ও জীববৈচিত্র্য কেন্দ্রের দেশব্যাপী পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, হুমকির মুখে পড়া মাছের সংখ্যা এখন ১০০ দাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে ২৫ প্রজাতির মাছ।

বামনী গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী শাহাব উদ্দিন। বাড়ির আশপাশের খাল-বিল, ডোবা ও নদী থেকে সারা বছর মাছ ধরে সংসার চালাতেন। গত কয়েক বছর ধরে ওই মাছ পাচ্ছেন না। এতে তিনি পেশা বদল করেন। আক্কাছ মিয়া বলেন, ‘৪-৫ বছর আগে হত্যেক দিন ৪০০-৫০০ টিয়ার মাছ বেইচতাম। ২-৩ বছর ধরি অন আর মাছ হাইনা। অন মাছ ধরা বাদদি রিক্সা চালাই।’

জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার বামনী, কেরোয়া, সোনাপুর, চরপাতা, চর আবাবিল, চরবংশী, চরমোহনা, রায়পুর ইউনিয়নে লোকজন পুকুরে ও জলাশয়ের পানি সেচে ফেলে। তারা স্বল্প সময়ে কম পরিশ্রমে মাছ ধরার পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এসব মাছ রায়পুর পৌর শহরের বাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

রায়পুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সেচে মাছ নিধন করলে মাছের প্রজাতি বিপন্ন হয়। এ সংক্রান্ত কোন নীতিমালা না থাকায় ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। তাছাড়া প্রাকৃতিক উৎসের মাছে অনেক আমিষ রয়েছে।


রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্যা বলেন, গত কয়েক দশকে নদ-নদীগুলোর প্রবাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। নির্বিচারে খাল-বিল সেচে বা কীটনাশক ব্যবহার করে মাছ নিধনের ফলে মৎস্য সম্পদ হুমকির মুখে। এছাড়াও হ্যাচারিতে পানি সংকট দেখা দিলে খাল থেকে পানি সেচে ব্যবসার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন খাল সেচে বা কীটনাশক ব্যবহার তাও সম্ভব হয় না।

(এমআরএস/এএস/নভেম্বর ২২, ২০১৪)