নাটোর প্রতিনিধি : অর্থাভাবে নাটোরের বড়াইগ্রামের রেজুর মোড়ের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত আজাদুল বারীর (৩৪) চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পেশায় স্কুল শিক্ষক। শ্রেণীকক্ষে প্রাণবন্ত পাঠদানে ব্যস্ত থাকার পরিবর্তে তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।  আহত শিক্ষক বর্তমানে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রফেসর ডা: আশরাফুল ইসলামের তত্বাবধানে রয়েছেন।

শিক্ষক আজাদুল বারীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নাটোর সদর উপজেলার ধলাট হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আজাদুল বারী গত ২০ অক্টোবর স্কুল শেষে অথৈ পরিবহনে নিজ বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার চকপাড়া গ্রামে ফিরছিলেন। পথে রেজুর মোড় এলাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় শিক্ষক আজাদুল বেঁচে গেলেও তার দুই হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। তাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে এবং পরে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রফেসর ডা: আশরাফের তত্বাবধানে রয়েছেন।

আজাদুলের স্ত্রী নাসরিন বেগম জানান, ঘটনার একমাস পেরিয়ে গেলেও তার স্বামী স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছেননা। মাঝে মধ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন তিনি। তবে তা স্পষ্ট নয়। কোন খাবারও খেতে পারছেননা। নলের মাধ্যমে কোনভাবে তরল খাবার খাইয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আজাদুলের ছোট ভাই এনামুল হক জানান,দুর্ঘটনার পর সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার সকল ব্যয় সরকারীভাবে বহনের ঘোষনা দেন। কিন্ত ঘটনার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। পরে আর একটি টাকাও পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে প্রায় ৪ লাখ টাকা তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আরো প্রায় ২ লাখ টাকার প্রয়োজন। এই টাকা যোগার করা তাদের পক্ষে এখন দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া তার ভাবীও ৭ মাসের অন্তসত্বা। অর্থাভাবে তার ভাইয়ের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যয় পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া সোমবার আহত ৪১ জনকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা,২০ কেজি চাউল, ১ কেজি করে ডাল ও শীত বস্ত্র বিতরন করা হয়। গুরুদাসপুর উপজেলা চত্বরে আয়োজিত আহতদের পরিবারের মাঝে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। শিক্ষক আজাদুলের বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

(এমআর/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০১৪)