ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী গামছা  শিল্পের জনক আ. গনি মিয়া গত রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার যোহর নামাজের পর মিয়াবাড়ী মসজিদে মরহুমের জানাযা শেষে নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি স্ত্রী, ৩ পুত্রসহ অসংখ্য স্বজন ও শুভাকাঙ্খি রেখে গেছেন।

ঝালকাঠির কির্ত্তীপাশা মোড় সংলগ্ন মিয়া বাড়িতে ১৯৪৪ সনে ৩০ বছর বয়সে তাঁতের গামছা তৈরি শুরু করেন তিনি। তার সু-নিপন দক্ষতায় তাঁত শিল্প প্রসার লাভ করে দেশে- বিদেশে ঝালকাঠির গামছার খ্যাতি লাভ করে। তার মসৃন গামছার কদর আছে এখনও। দিনে দিনে সারা দেশে এই গামছার সুনাম ছড়িয়ে পরে। যা ‘গনি মিয়ার গামছা’ নামে পরিচিত বিভিন্ন জেলায় গনি মিয়ার গামছার মার্কার সুনাম আজো অক্ষুন্ন রয়েছে।

দীর্ঘ ৭০ বছর গামছা বুনে জীবিকা নির্বাহ করেছেন শতবর্ষী এই তাঁতশিল্পী আ. গনি মিয়া। তিনি তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। তার বাড়িতে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের পদাচরনা ছিল।তার সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে অসংখ্য পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে। শেষ জীবন কেটেছে তার অর্থ কষ্টে ও বিছানা লগ্ন হয়ে। তার তৈরি গামছা শিল্পের প্রতিবেদন তৈরিকালে সর্বশেষ সাক্ষাৎকার দেন এ প্রতিবেদক আসিফ মানিক ও ‘জীবন শৈলী’র সাব এডিটর গাজী মুনসুরের সাথে। ক্যামেরার ক্লিক দেখেই রাগ হয়ে বলেছেন -এসব লিখে ছবি ছাপিয়ে লাভ কি? বিছানায় পড়ে আছি কেউ ’টাহা’ (টাকা) দিবেনা ,খবরও রাখবেনা কেউ! কথাটা ছিল ক্ষোভ ও অভিমানের।

সদ্য প্রয়াত এই তাঁতশিল্পীর বড় ছেলে নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, পিতার সুনাম ধরে রাখতে এবং ঝালকাঠি জেলার ঐতিহ্যকে লালন করতে গামছার গুনগতমান বজায় রেখে তাঁতশিল্পটি ধরে রাখবেন তিনি।

প্রবীন এ তাঁতশিল্পীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ব্যাবসায়ী, চাকুরীজীবী, ইতিহাস লেখক ও গবেষকরা।

(এসএম/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০১৪)