লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়েন ভূঁইয়ার হাট এলাকায় হুন্ডিগো পোল নামক স্থান থেকে জাকিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূকে আটকের প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। একই সঙ্গে তারা দলবদ্ধ হয়ে থানায় এসে অবস্থান করে ওই গৃহবধূকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার রাত ১০ টায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রায়পুর থানা পুলিশ ওই  গৃহবধূকে তার প্রবাসী স্বামী মো. সেলিম হোসেনের বাড়ি থেকে আটক করে। এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।

ওই এলাকার মৃধা বাড়ির জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু ইউছুফ ও এলাকাবাসী নুর মোহাম্মদ জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে মৃত সেকান্তর এর ছেলে দরিদ্র সেলিমের সঙ্গে দালাল বাজার ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের চাঁন মিয়া হাওলাদারের মেয়ে জাকিয়া বেগমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর জাকিয়া তার পিতার সম্পত্তি ও গয়না বিক্রি করে সেলিমকে কুয়েত পাঠান। তাদের ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০০৭ সালের নভেম্বরে হঠাৎ করে পারিবারিক কলহের জের ধরে সেলিম প্রবাস থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তালাকপত্র পাঠান। ২০০৮ সালে জানুয়ারি মাসে এ ঘটনায় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বিশাল শালিশ বৈঠক বসান। পরে বৈঠকে জাকিয়াকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিদায় দেওয়ার জন্য সেলিম ও তার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেলিমের মা সুলতানের নেছা বাদী হয়ে উল্টো ওই সিদ্ধান্ত না মেনে গোপনে আদালতে গিয়ে জাকিয়া, তার পিতা চাঁন মিয়া ও ভগ্নিপতি নূর মোহাম্মদকে আসামী করে লক্ষ্মীপুর আদালতে একটি ডাকাতি মামলা করেন। এতেও কোন কাজ না হওয়ায় সেলিমের পরিবার একই এলাকার প্রভাবসালী মিঠু চৌধুরীকে দিয়ে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে মাদক বিক্রির অভিযোগ দিয়ে জাকিয়াকে আটক করায়। পরে পুলিশ মঙ্গলবার রাত ১০ টায় জাকিয়াকে স্বামীর বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ খবরে উত্তেজিত প্রায় ২ শতাধিক এলাকাবাসী গ্রেফতারের প্রতিবাদে এলাকায় বিক্ষোভ করে এবং বুধবার দুপুর ১২ টায় থানায় অবস্থান করে গৃহবধূ জাকিয়াকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধুর শাশুড়ি সুলতানের নেছা বলেন, জাকিয়াকে বাড়ি থেকে তাড়াতে এই মিথ্যা ডাকাতি মামলার আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। কি থেকে কি হয়ে গেল তা তিনি বলতে পারবেননা।

রায়পুর থানার ওসি একেএম মনজুরুল হক আকন্দ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিকে মাদ বিক্রির অভিযোগে গৃহবধূ জাকিয়াকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে প্রমানিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

(এমআরএস/এএস/নভেম্বর ২৬, ২০১৪)