ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:মুলাডুলিতে মহাসড়কের দুই ধারের জায়গা গণ দখলের কারবার চলছে। এলাকার প্রভাবশালীদের নির্দেশে দখলদাররা সেখানে নির্মাণ করছে অবৈধভাবে ঘর-বাড়ি।

এসব স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ এবং দ্রুত অপসারণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সড়ক ও জনপথ কার্যালয় হতে নোটিশ দেয়া হলেও থেমে নেই দখল প্রক্রিয়া।

মঙ্গলবার সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মুলাডুলি ইক্ষু খামার হতে শুরু করে মুলাডুলি কলেজ পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে সরকারি জায়গায় বাঁশ ও সিমেন্টের খুঁটি পুতে দখলে নেয়া হয়েছে। সড়কের পূর্ব পাশে চলছে ঘরবাড়ি নির্মাণ। দখলদাররা মহাসড়কের ঢালু থেকে মাটি কেটে ঘরের জায়গা উঁচু করার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। দখলকৃত জায়গায় ইতিমধ্যে অবৈধভাবে ২০টি ঘর তৈরি করা হয়েছে।

দখলদাররা জানান, প্রতিটি বসত ভিটা নির্মাণের জন্য তারা পাঁচ কাঠা করে জায়গা দখলে নিয়েছেন। এসব জায়গা মহাসড়ক হতে ২০ থেকে ৫০ ফুটের মধ্যে অবস্থিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক দখলদার জানান, মুলাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মালিথার নামে এখানে ‘সেলিম নগর’ গ্রাম হবে। চেয়ারম্যান তাকে এখানে পাঁচ কাঠা জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি দুইটি টিনের ঘর পায়খানা তৈরি করে সেখানে বসবাস শুরু করেছেন। মুসা জানান, চেয়ারম্যানের নির্দেশে এখানে ঘর তুলছেন। এখানে শিম ক্ষেত ছিল। ঘর করার সময় শিম ক্ষেত কেটে ফেলা হয়। রত্মা বেগম বলেন, তিনিও এখানে ঘর তুলেছেন চেয়ারম্যানের নির্দেশে।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জাহিদ অভিযোগ করেন, মহাসড়কের পতিত জমিতে তারা শিম চাষ করেছিলেন। কিন্তু দখলদাররা কয়েকদিন আগে সেই শিম ক্ষেত কেটে সেখানে বাড়ি-ঘর তৈরি শুরু করেন। অনেক দরিদ্র কৃষকের শিম ক্ষেত নষ্ট করে সেখানে ঘর-বাড়ি তৈরি হচ্ছে। গ্রামবাসিরা জানান, মহাসড়কের পাশে হঠাৎ বস্তির মতো বাড়ি-ঘর তৈরি হওয়ায় তারা ভীষণ শংকিত। কারণ এসব অবৈধ বাড়িতে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) পাবনা কার্যালয় সুত্রে জানা যায় , কুষ্টিয়া-নাটোর মহাসড়কের ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে সওজের জায়গায় একশ্রেণির দখলদার সেখানে অবৈধভাবে ঘর-বাড়ি তৈরি করছেন। মহাসড়কের বিস্তৃত জায়গায় খুঁটি পুতে রাখা হয়েছে দখলের জন্য। সড়ক ও জনপথ পাবনা-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মির্জা মেজাদুল হক জানান, মহাসড়কের দেড় কিলোমিটার বিস্তৃত জায়গায় অবৈধ ঘর-বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যানের নামে সেলিম নগর গুচ্ছগ্রাম বলে তারা লোক মারফত শুনেছেন।

তিনি আরো জানান, অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ ও নির্মিত বাড়িঘর দ্রুত অপসারণের জন্য চেয়ারম্যানকে পাবনা সওজ কার্যালয় থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও দখল ও নির্মাণ কাজ করা বন্ধ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে মুলাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মালিথা জানান, মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গায় ২০০ পরিবারের বসবাসের জন্য তিনি ঘর-বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এরা অধিকাংশই দরিদ্র মানুষ। তার ধারণা, এখানে বসবাস শুরু হলে মহাসড়কের মুলাডুলিতে আর কখনো বাস ডাকাতি ও ছিনতাই হবে না।


(এসকে/এসসি/নভেম্বর২৭,২০১৪)