রায়পুর( লক্ষ্মীপুর)প্রতনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসািকেন্দ্রে ২১ জন পরীক্ষার্থী অন্যজনের হয়ে ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে ।

তারা সবাই একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। সন্দেহ হওয়ায় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তারা পরীক্ষা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গতকাল কেন্দ্রসচিব মাকসুদুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আলম ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন আহাম্মদ।

ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শিউলি আক্তার। তিনি জানান, এক মাদ্রাসার ২১ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা একজনের হয়ে অন্যজনের পরীক্ষা দিচ্ছে। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ওই দুজনসহ অন্যরাও ভয়ে আর পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেনি। অভিযোগ উঠেছে, শায়েস্তানগর বানাতুল মুসলিমীন দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পাসের হার বেশি দেখাতে তাদের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষায় পাঠিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, শায়েস্তানগর বানাতুল মুসলিমীন দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষার জন্য ৩২ জন পরীক্ষার্থীর তালিকা দেওয়া হয়। ওই কার্যালয় থেকে তাদের নামের ওপর প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়। নিয়ম অনুয়ায়ী, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পরীক্ষার্থীর ছবি সত্যায়িত করে প্রবেশপত্রে লাগিয়ে দেন। গতকাল ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুয়া পরীক্ষার্থী বলে সন্দেহ হলে মর্জিনা আক্তার ও ঝুমুর আক্তার নামের দুজনকে অফিসকক্ষে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তারা নিজেদের নাম ভুলভাবে বলে। এতে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তাদের সংশ্লিষ্ট কক্ষে যেতে বলা হয়। পরীক্ষাকক্ষে গিয়ে তারা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এবং সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই মাদ্রাসার আরও ১৯ পরীক্ষার্থী আরবি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেনি।

কেন্দ্রসচিব মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এক মাদ্রাসার ২১ জন পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিত থাকাটা অস্বাভাবিক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আমি ইউএনও মহোদয়ের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি।’এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শায়েস্তানগর বানাতুল মুসলিমীন দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল হোসাইন দাবি করেন, দুটি বিষয়ে ২১ জনেরই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। এ জন্য তারা আর পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ভবিষ্যতে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে তারা পরীক্ষা দেবে। একজনের হয়ে অন্যজনের পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তারা কেউ ভুয়া নয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন আহাম্মদ বলেন, ঘটনাটি খুবই উদ্বেগের। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রসচিবও একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে ঘটনার সঙ্গে জডড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(পিকেবি/এসসি/নভেম্বর২৮,২০১৪)