সাভার প্রতিনিধি : ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে অপহরণকারীরা পেশাদার বলে দাবি করেছে র‌্যাব। নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ না নিয়েই সাভারের নবীনগরে ফেলে যাওয়ার কারণ বুঝে উঠতে পারছেন না সাইফুল ইসলাম। অপহরণকারীদের কাউকে চিনতেও পারেননি তিনি।

গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত দেড়টায় র‌্যাব-৪ নবীনগর ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অপহরণের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে র‌্যাব। এ সময় সংবাদ কর্মীদের সামনে ঘটনার বর্ণনা দেন উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম।

সাইফুল ইসলাম বলেন, অপহরণ করে তাকে মাইক্রোবাসে উঠানোর পর পা দিয়ে মাথা চেপে ধরে অপহরণকারীরা। মিনিট দশের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর শুক্রবার সকালে তাকে রুটি ও কলা খেতে দেয় অপহরণকারীরা। পুরো সময়টা তার চোখ বেঁধে রাখা হয় তার।

সাইফুল বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে নবীনগরে ফেলে দেওয়ার আগ মুহূর্তে লাঠি দিয়ে তাকে পেটায় অপহরণকারীরা। পরে গাড়ির দরজা খুলে স্মৃতিসৌধের সামনে লাথি দিয়ে তাকে ফেলে যায়। এ সময় এক পথচারীকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন তিনি সাভারের নবীনগরে আছেন। পরে ওই পথচারীর সহায়তায় পাশের একটি হোটেলে গিয়ে স্ত্রীর কাছে ফোন করে পরিস্থিতি জানান সাইফুল।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে নবীনগরের একটি হোটেল থেকে ব্যবসায়ী সাইফুলকে উদ্ধার করেন র‌্যাব-৪ এর সদস্যরা।

তিনি বলেন, সম্প্রতি খুন ও অপহরণ বেড়ে গেছে। একটি পেশাদার অপরাধীচক্র সারা দেশে এসব করে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে মুক্তিপণের আশায় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে অপহৃতকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারে মাঠে নামে র‌্যাব।

তিনি বলেন, অপহরণকারীদের গ্রেফতার করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল র‌্যাব। অপহরণকারীরা ঢাকার পশ্চিম দিকে অবস্থান করছে বলে তাদের কাছে তথ্য ছিল। তবে ঠিক কী কারণে তাকে নবীনগর এলাকায় ফেলে গেছেন অপহরণকারীরা, তা অস্পষ্ট। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যবসায়ী সাইফুলকে র‌্যাব হেফাজতে রাখা হবে।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ১ মে রাতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে প্রথমে তিনি এক আত্বীয়ের বাড়িতে যান। পরে সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এসময় একটি মাইক্রোবাস এসে তার সামনে থামে এবং তাকে জোর করে ভেতরে তুলে নেয়। এরপর কিছুক্ষণ পর থেকে কোনো ঘটনা জানতে পারেননি তিনি। মুক্তিপণ চাওয়ার বিষয়টিও তার অজানা ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তখন আমরা নিশ্চিত হই সাইফুল অপহৃত হয়েছে। সাইফুলকে পেতে কোনো মুক্তিপণ দিতে হয়নি।

(ওএস/এটি/মে ০৩, ২০১৪)