রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : দায়সারাভাবে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শনিবার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে মাদক ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ অবহিত করণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা রোদে দাঁড় করে রাখা হয় শিক্ষার্থীদের। এতে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে কোমরভাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের আশা নামের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। পরে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।

অপরদিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রীতি ফুটবল খেলায় উভয় পক্ষের মধ্যে এক সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে অন্তত ১০জন আহত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ নিয়ে গোটা এলাকা এখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

জেলা তথ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন ভাবনা বিষয়ে জনগণকে অবহিত করণ এবং সম্পৃক্ত করণের লক্ষ্যে বিশেষ প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মাদক ও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নে নারী ও শিশুর উন্নয়ন এবং ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে র‌্যালি ও আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান, ক্রিড়া প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি উপজেলা সদরের কোন স্কুল মাঠে করার কথা থাকলেও কতিপয় সুবিধাভোগীর কারণে তা যাদুর চর উচ্চ বিদ্যালয়ে করা হয়। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, সেখানে কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ছিল না কোন নিয়ম নীতি। ঘন্টার পর ঘন্টা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোদে দাড় করিয়ে রাখা হয়। বসার কোন ব্যবস্থা ছিল না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিনকে প্রধান অতিথি, উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসীকে বিশেষ অতিথি করে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নানা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সকাল ৮ টায় কর্তিমারী বাজারে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র‌্যালি করা হয়। র‌্যালিটি বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে যাদুর চর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। ওই মাঠে র‌্যালি অবস্থায় শিক্ষার্থীদের লাইন করে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে চলে নেতাদের তুমুল বক্তৃতা। এতে এক শিক্ষার্থী সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা। কোমরভাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় ও যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়। কিন্তু নানা অনিয়মের কারণে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এতে সুজন, মনির, মজিবর, মতিন, সোহাগ, আরিফ, দুলাল, লিমন, আসাদ ও জাহিদ আহত হয়। দফায় দফায় চলে এ সংঘর্ষ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ পরিস্থিতিতে এমপিসহ আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা তথ্য অফিসার নুরন্নবী খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আয়োজনে কোন ত্রুটি ছিল না। এমন অনুষ্ঠান আরও করেছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার প্রয়োজন মনে করিনি।

(আরএস/এএস/নভেম্বর ২৯, ২০১৪)