স্টাফ রিপোর্টার : সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ পেয়েছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিন।

আগামী ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে চারটায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কৃত লেখকের হাতে পদক তুরে দেয়া হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামছুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লেখক ও অধ্যাপক নিয়াজ জামান এবং কবি আসাদ চৌধুরী। এছাড়াও দেশবরেণ্য কবি সাহিত্যিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিনের জন্ম ভারতের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে, ৬ মার্চ ১৯৩২ সালে। শৈশবের পুরো সময় কেটেছে ওখানেই। কৈশোরের শুরুতেই ১৯৪৭-এর দেশভাগের পরে চলে আসেন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ)।

পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়েছিল বর্ধমানের যবগ্রামের ওস্তাদ জাহেদ আলির মক্তবে। মাধ্যমিকের শুরু বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুলে। পরে ঢাকার কামরুন্নেসা গার্লস হাইস্কুল এবং খুলনা গার্লস কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন রাজশাহী থেকে।

কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। অধ্যাপনা করেছেন খুলনা সরকারি গার্লস কলেজ, মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা সরকারি কলেজ, টাঙ্গাইলের করটিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও ঢাকার ইডেন কলেজে।

দেশভাগ জাহানারা নওশিনকে এক নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। দেশভাগের ফলে সৃষ্ট নানা মানবিক সমস্যা-সংঘাত এবং ব্যাক্তির আইডেনটিটি ক্রাইসিস তাকে জীবনের রুঢ় বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।

তবুও এসবের চেয়ে ব্যাক্তিস্বাধীনতা, প্রেম, ঐতিহ্য, পারিবারিক মূল্যবোধ ও সমসাময়িক ভাবনা তার লেখায় উজ্জ্বলতা পেয়েছে। তার লেখা একই সঙ্গে ছদ্মময় এবং তীর্যক বাক্যবাণে সুখপাঠ্য।

প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য মিলে এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৯। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-বৃক্ষে বৃক্ষে বিষকরবী, পিতামহীর পাখি, দুহিতা, প্রেম ও পরিজাত, হাড়িকাঠ, আহা ভূত বাহা ভূত ইত্যাদি।

প্রসঙ্গত, বাংলা ১৪০১ সস (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর একজন কৃতী নারী-সাহিত্যিক অথবা সাহিত্য-গবেষককে এ পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৯, ২০১৪)