কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : মাথার উপর নেই টিনের চাল। নেই দরজা-জানালাও। একপাশে টিনের বেড়া থাকলেও অন্যপাশের বেড়া ঝড়ে উড়ে গেছে। একটি কক্ষে গোটা সাতেক বেঞ্চ ও দুটি অর্ধভঙ্গ চেয়ার-টেবিল দিয়ে চলছে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ১৫৫ ছাত্র-ছাত্রীর লেখাপড়া। বৃষ্টি হলেই ছুটি হয়ে যায় স্কুল। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম হাচনাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। প্রায় এক বছর ধরে এভাবেই চলছে এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান।

 

সরেজমিনে বিদ্যালয় ঘুরে দেখাযায়, দূর্গম ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পাঁচটি গ্রামের শিশুদের পাঠদানের একমাত্র বিদ্যালয়টি গত এক বছর ধরে অর্ধভঙ্গ অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। দূর থেকে এটি কোন পরিত্যক্ত গোঁয়ার ঘর মনে হলেও সামনে গিয়ে দেখাযায় শিশুদের কোলাহলে বিস্তীর্ন ধান ক্ষেতের মাঝে দাড়িয়ে থাকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গন মুখরিত। বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক একটি কক্ষে বসেই তিনটি শ্রেণীর শিশুদের পাঠদান করাচ্ছে। বসার চেয়ার ও বেঞ্চ না থাকায় শিক্ষকসহ ছাত্র-ছাত্রীরাও দাড়িয়ে ক্লাস করছে।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র রাইসুল জানায় বৃষ্টি হইলে আর আমাগো ক্লাস হয় না। দ্যহেন না চালে টিন নাই”। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া জানায়, বওয়ার বেঞ্চ নাই,হেইয়ার লাইগ্যা সবাই একলগে বই। এই রুম ছাড়া অন্য রুমতো এক্কেরে ভাঙ্গা।

স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, প্রায় একবছর আগে ঝড়ে বিদ্যালয়ের সবকটি কক্ষ বিধ্বস্ত হয়। স্কুলের টিনের চাল উড়ে যায়। কিন্তু এ বিদ্যালয়টি সংস্কার না করায় এখন ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামিমা নাসরিন জানান, দেড় শতাধিক ছত্র-ছাত্রী নিয়ে তারা এখন বিপদে পড়েছেন। স্কুল ঘর না থাকায় একটা রুমের মধ্যেই সব ক্লাস করতে হয়। প্রচন্ড রোদ ও বৃষ্টিতে ক্লাস করা যায় না। উপজেলা শিক্ষা অফিসে স্কুল ঘর সংস্কারের জন্য আদেন করলেও এখনও স্কুল সংস্কারের উদ্যেগ নেয়া হয়নি। এ কারণে এবার বর্ষা মেীসুমে এই বিদ্যালয়ে আর ক্লাস করা যাবে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, ওই স্কুলের বেহাল অবস্থার কথা তারা জানেন। কিন্তু সরকারি বরাদ্ধ পাওয়ায় বিদ্যালয়ের বিধ্বস্ত রুমগুলো সংস্কার করা যাচ্ছেনা। তবে তারা জরুরী উদ্যেগ নিবেন বলে জানান।

(এমকেআর/এএস/মার্চ ০৫, ২০১৪)