ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় শুক্তাগড় ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের ঠাকুরবাড়ি গভীর জঙ্গল এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বুদ্ধিজীবিসহ মুক্তিকামী ২৫ জনেরও বেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে হত্যা করা হয়।

রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় নৃশংসভাবে হত্যা করে ওই জঙ্গলে গণকবর দিয়ে রাখে পাকিস্থানী বাহিনী। বর্তমানে এ শহীদদের পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবন যাবন করছেন।

স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরে ২০১০ সালের ৯ এপ্রিল স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খনন করে শহীদদের বেশকিছু কঙ্কাল উদ্ধার করে। কিন্তু দীর্ঘদিন হলেও গণকবর সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এমনকি শহীদ পরিবারগুলো কোন শহীদ ভাতাও পায়নি।

তারা শুধু পেয়েছে গণকবরের শহীদ স্বনদের অচেনা কঙ্কাল। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি সোনার বাংলা অথচ আগামী প্রজন্মের কাছে তাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছে না কেহই।

এ গণকবরের যে সকল শহীদদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন- কাঠিপাড়া গ্রামের জীতেন্দ্রনাথ বড়াল, অনুকূল বড়াল, কালিকান্ত মন্ডল, ব্রজেন্দ্রনাথ হালদার, সতীশ চন্দ্র, ক্ষিতিষ চন্দ্র হালদার, ললিত চন্দ্র মন্ডল, পার্শবর্তী নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের যোগেন্দ্রনাথ মিস্ত্রী, কামিনী হালদার, হরিমোহন হালদার, কার্ত্তিক চন্দ্র হালদার, যোগেশ্বর মিস্ত্রী, নৈকাঠী গ্রামের অমরকান্ত নাথ, ধীরেন্দ্রনাথ মিস্ত্রী, সুরেন্দ্রনাথ গায়েন, সূর্য ঘরামী, মধুসুধন, ক্ষেত্রমোহত অধিকারী, কাঁলাচাদ, হরলাল চক্রবর্তী ও পারবতী মিস্ত্রীসহ ২৫ জনেরও বেশি হিন্দু লোকদের নির্মমভাকে হত্যা করা হয়।

কাঠিপাড়া গ্রামের শহীদ জীতেন্দ্রনাথ বড়ালের ছেলে শান্তি রঞ্জন বড়াল জানান, বি.এ.পাশ করেও বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছি। বর্তমানে ৫ সদস্যের পরিবারের বোঝা তারই বহন করতে হচ্ছে এর মধ্যে তার ছোট ভাই সত্যরঞ্জন বড়াল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তার পরিবারের লোকজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন তিনি।

শহীদ সুরেন্দ্রনাথ গায়েনের ছেলে সমরকান্ত গায়েন ও শহীদ কাঁলাচাদ বানিয়ার ভাই অমূল্য বানিয়া জানান, বর্তমানে আর্থিক সংকটে আর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। কেউ তাদের খোঁজকবর নিচ্ছে না।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ মিস্ত্রীর স্ত্রী বৃদ্ধ মালতি রানী ও শহীদ অমরকান্ত নাথেও ছেলে অজিৎ দেবনাথ জানান, অর্থাভাবে খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন কাটছে। দীর্ঘদিন পরে শহীদদের স্বজনরা কাঠিপাড়া গণকবরে কঙ্কাল পেলেও তারা অদ্যবদী এ পরিবারগুলো পায়নি শহীদ ভাতা।

অচিরেই যাতে কালের স্বাক্ষী গণকবরের স্মৃতি সংক্ষণের কাজ দ্রুত শুরু করা হয় এবং পরিবারগুলো শহীদ ভাতা পায় সে জন্য প্রধান মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি এবং হস্থক্ষেপ কমানা করেছে শহীদ পরিবারগুলো।




(এএম/এসসি/ডিসেম্বর০১,২০১৪)