স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের মামলার রায় যেকোনো দিন ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষে সুবহানের বিরুদ্ধে পাল্টা ও সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।

সুবহানের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ
অভিযোগ-১: একাত্তরে সহযোগী জামায়াত নেতা ও বিহারিদের নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে জামে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া স্বাধীনতাকামী মানুষদের অপহরণ করে হত্যা করেন সুবহান।

অভিযোগ-২: ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সুবহানের নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে ঈশ্বরদীর যুক্তিতলা গ্রামে হামলা চালিয়ে লুটপাটসহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তিনজনকে গুরুতরভাবে আহত এবং পাঁচজন নিরস্ত্র লোককে হত্যা করা হয়।

অভিযোগ-৩: ১৯৭১ সালের ১৬ মে ঈশ্বরদীর অরণখোলা গরুর হাট থেকে দুইজনকে অপহরণ করে পাবনার ঈশ্বরদীতে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করেন সুবহান।

অভিযোগ-৪: ২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঈশ্বরদীর সাহাপুর গ্রামে অসংখ্য বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং কয়েকজনকে হত্যা করে।

অভিযোগ-৫: ১১ মে সুবহানের নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পাবনা সদর থানার কুলনিয়া ও দোগাছি গ্রামে হামলা চালিয়ে সাতজন নিরীহ-নিরস্ত্র, স্বাধীনতাকামী লোককে হত্যা এবং কয়েকটি বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়।

অভিযোগ-৬: ১২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি বিরাট বহর সুজানগরের কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে তিন-চারশ’ মানুষকে হত্যা এবং বিভিন্ন বাড়ি-ঘরে লুটপাট চালায় ও পুড়িয়ে দেয়।

অভিযোগ-৭: ২০ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাবনা সদর থানার ভাড়ারা গ্রামে ১৮ জনকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। শহীদদের মধ্যে একজনকে ওই গ্রামের একটি স্কুলে হত্যা করা হয়। বাকি ১৭ জনকে সদর থানার নূরপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতনের পরে আটঘরিয়া থানার দেবোত্তর বাজারের পাশে বাঁশবাগানে গুলি করে হত্যা করা হয়।

অভিযোগ-৮: ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে আতাইকুলা থানার (সাবেক পাবনা সদর থানা) দুবলিয়া বাজার থেকে দুইজন স্বাধীনতাকামী লোককে অপহরণ করে কুচিয়ামাড়া গ্রামে একটি মন্দিরের ভেতরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন সুবহান।

অভিযোগ-৯: ৩০ অক্টোবর রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে ঈশ্বরদীর বেতবাড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং চারজনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেন।