গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে ছাত্রীর সাথে এক কলেজ শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তোলপাড় চলছে। আটকের পর ওই শিক্ষক আত্মগোপনে থেকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। অধ্যক্ষ মুচলেকা নিয়ে ছাত্রীকে অবিভাবকের কাছে ছেড়ে দিলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। লম্পট মোহাম্মদ আলী স্বপন গাজীপুর শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের ইংরেজীর প্রভাষক। আর ছাত্রীটির বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে।

কলেজের একটি সূত্র জানায়, মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রী মোহাম্মদ আলী স্বপনের কাছে প্রাইভেট পড়তো। ওই সুবাদে স্বপন ফুসলিয়ে ছাত্রীর সাথে এক পর্যায়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। সোমবার সকালে স্বপন জোর করে স্ত্রী-সন্তানকে গ্রামের বাড়ি রাজেন্দ্রপুর পাঠিয়ে দেয়। সন্দেহ হলে স্ত্রী দুপুরে বাসায় ফিরে স্বপন ও ওই ছাত্রীকে ঘরে অনৈতিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্বপনের স্ত্রী ঘটনাটি কলেজের অধ্যক্ষ ও ছাত্রীর পরিবারকে জানায়।

পরদিন কলেজের অধ্যক্ষ অফিসে ছাত্রীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে। তার ভ্যানিটি ব্যাগ তল্লাশী করে জন্মনিরোধ ট্যাবলেট ও বিভিন্ন আপত্তিকর ম্যাসেজ লেখা মোবাইল জব্দ করা হয়। খবর দিয়ে কলেজে আনা হয় ছাত্রীর মা ও ভাইকে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের জিম্মায় ছাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার ৪দিন পরও ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি এখন শহরবাসীর মুখে মুখে। কলেজের শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা অভিযুক্ত প্রভাষক ও ছাত্রী দু’জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেছেন।

ছাত্রীর মা জানান, তার স্বামী একজন প্রবাসী। মেয়ে প্রতিদিন বাড়ি থেকে কলেজে আসা-যাওয়া করতো। গত একমাস আগে সে গাজীপুর শহরের একটি মেসে উঠে। তিনি ওই লম্পট শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

ছাত্রীর বড় ভাই জানান, সামাজিক অবস্থান, মানসম্মানের কথা ভেবে তার আইনের আশ্রয় নেন নি। দু’দিন আগে শিক্ষক স্বপন বাড়ি এসে তাদের কাছে ক্ষামা চেয়েছে। ক্ষমা না করে তাকে চলে যেতে বলেছেন তিনি। তিনি নিদোর্ষ এমন কথা ফোনে অধ্যক্ষকে বলার জন্যেও প্রস্তাব দিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। তারা তা বলেননি, কারন, তিনি দোষী। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে চাকুরির আগে সে গফরগাঁওয়ের কান্দিপাড়া ডিগ্রি কলেজে চাকুরি করতো। একই অপরাধে সে সেখান থেকে চাকুরিচ্যুত হয়। ভেবেছিলাম কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। কলেজে কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছিল তার বিরুদ্ধে এ ধরনের আরো অভিযোগ ছিল। কিন্তু প্রমান পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন প্রমান দেওয়ার পরও ব্যবস্থা নেওয়নি। এমন একজন লম্পটের চাকুরি থাকার কথা না। সুযোগ পেলে সে এধরনের জঘন্য ঘটনা আরো ঘটাবে।

যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত স্বপনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। শহরের দক্ষিণ ছায়াবিধি এলাকার ভাড়া বাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আলতাব হোসেন জানান, ঘটনাটি কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক আয়েশ উদ্দিনকে জানানো হয়েছে। শুনেছি তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

(এসএএস/এএস/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৪)