স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের নামে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সভাকক্ষের বরাদ্দ নেয়া হয়েছিল। অথচ সেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্লোরবল ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন! এটাকে প্রতারণা হিসেবেই দেখছেন ক্রীড়া-সংশ্লিষ্টরা।

স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া সংবাদ সম্মেলন শেষে জানিয়েছেন, ‘তারা তায়কোয়ান্দোর সংবাদ সম্মেলন করার জন্য আমাদের কাছ থেকে সভাকক্ষের বরাদ্দ নিয়েছিল। কিন্তু তারা করেছে ফ্লোরবলের সংবাদ সম্মেলন। এটা এক ধরণের প্রতারণা। আমরা এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকব।’

কেন এ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে ফ্লোরবল ফেডারেশন? এ বিষয়ে ফ্লোরবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান শিকদারের মুখোমুখি হলে তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘আমি তো তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনেরও সাধারণ সম্পাদক। তাই তায়কোয়ান্দোর নামেই বরাদ্দ নিয়েছিলাম সভাকক্ষটি। এখানে সমস্যার কিছু তো দেখছি না।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘আপনি জানেন বাংলাদেশে দুইটা তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের স্বীকৃতি দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। একটা হলো বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন। আর আমাদেরটা- বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। তাই আমি এখান থেকে সরে আসতে চাচ্ছি।’

বাংলাদেশে ফ্লোরবলের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০০৮ সাল থেকে। এমনটাই দাবি ফ্লোরবল ফেডারেশনের তথাকথিত কর্মকর্তাদের। অথচ এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। এ ব্যাপারে সোলায়মান শিকদার জানিয়েছেন, ‘আমরা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আবেদন করেছি। বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

রবিবার ও সোমবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ২দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে প্রথম জাতীয় ফ্লোরবল প্রতিযোগিতা। মজার বিষয় হচ্ছে- প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য ফ্লোরবল ফেডারেশনের প্যাডে ৩দিনের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম বরাদ্দ চেয়েছিল তারা। কিন্তু ফ্লোরবল ফেডারেশন ক্রীড়া পরিষেদের নিবন্ধিত না হওয়ায় অনুমতি দেয়নি এনএসসি। ফলে তায়কোয়ান্দোর নাম ভাঙ্গিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা আইন সিদ্ধ নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের কোনো প্রোগাম হলে আমরা বাধা দেব না। কিন্তু যদি ফ্লোরবল ফেডারেশনের কোনো প্রোগ্রাম হয়; তাহলে অবশ্যই তা আমরা করতে দিব না। কারণ তারা আমাদের নিবন্ধিত কোনো ফেডারেশন না। তারা যদি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম ভাড়া নেয়; তাহলে কোনো কথা নেই।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিবন্ধিত ফেডারেশন ছাড়া কোনো খেলা চালাতে হলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ভাড়া গুণতে হয় ৫০ হাজার টাকা। যদি এসি চালানো হয় সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে যাবে দ্বিগুণ। ফ্লোরবল প্রতিযোগিতা চালাতে হলে ৩ দিনে তথাকথিত ওই ফেডারেশনকে গুণতে হবে ৩ লাখ টাকা। এই গরমের মধ্যে এসি ছাড়া কোনো প্রতিযোগিতা চালানো সম্ভব নয়। পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এ প্রতিযোগিতা আয়োজনে তাদের দিচ্ছে ২ লাখ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। তবে বিষয়টি এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, অস্তিত্বহীন একটি ফেডারেশনের প্রতিযোগিতায় পৃষ্ঠপোষক হয়েছে ওয়ালটন। আর এই প্রতিযোগিতার মিডিয়া পার্টনার হয়েছে এটিএন বাংলা।

(ওএস/পি/মে ০৩,২০১৪)