নিউজ ডেস্ক : পানির নিচে চলাচলে সক্ষম ও স্বাধীনভাবে বিচরণকারী বিশেষ নৌযান (সাবমেরিন) তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন সিলেটের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, টানা দু’মাস চেষ্টার পর দু’টি সাবমেরিন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এখন এতে বিভিন্ন ধরনের ‘সেন্সর ইন্টারফেইস’ সংযোজনের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে পানির নিচে বিভিন্ন গবেষণা ও অনুসন্ধান কাজ ‍চালানো যাবে।

সিলেট মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় সাবমেরিন তৈরি প্রজেক্টের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা নাবিল এর আগে ড্রোন তৈরি করেছেন। এখনও ড্রোনের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও গবেষণায় যুক্ত তিনি। একইসঙ্গে সিলেট মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন।

তার তত্ত্বাবধানে তৈরি করা ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন (ইভিএম) গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন ব্যবহারের জন্য পর্যবেক্ষণ করেছে।

প্রথম সাবমেরিন তৈরির সফলতার খবর জানিয়ে নাবিল বলেন, খুব গোপনীয়ভাবে সাবমেরিন তৈরির কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে সাবমেরিন উন্মুক্ত করা হবে।

বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী সাবমেরিন ব্যবহার করে। শত্রুবাহিনীর জাহাজ ও আক্রমণ মোকাবেলায় এর ভূমিকা ব্যাপক। এছাড়াও জাহাজ বহরকে রক্ষা করা, অবরোধ দূরীকরণ, প্রচলিত স্থল আক্রমণ ও বিশেষ বাহিনীকে গুপ্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণে সাবমেরিনের ব্যবহার রয়েছে।

ইন্টারনেটের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণভাবেও সাবমেরিন ব্যবহার করা হয়। এরমধ্যে সমুদ্র বিজ্ঞান, উদ্ধার তৎপরতা, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম, পরিদর্শন এবং রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধার জন্য সাবমেরিন ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সাবমেরিনকে ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশেষায়িত কার্যক্রম হিসেবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতাসহ সাগরতলে অবস্থিত ক্যাবল মেরামতেও সম্পৃক্ত করা হয়। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সাগরতলে নিমজ্জিত প্রত্নতত্ত্ব পরিদর্শনেও সাবমেরিন ব্যবহৃত হয়।

ড্রোন গবেষক সৈয়দ রেজওয়ান হক নাবিল বলেন, প্রায় দুইমাস কাজের পর মেট্রোপলিটন ভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ তৈরি করে দু’টি ‘আননেমড সাবমেরিন’।

এ প্রজেক্টের প্রধান সুপারভাইজার ছিলেন নাবিলসহ আরও তিনজন শিক্ষক। ইইই ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের দশজন শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কাজ করেছেন।

নাবিল বলেন, দু’টি সাবমেরিনের প্রথমটি কাজ শুরুর প্রায় একমাসের মধ্যেই তৈরি হয়ে যায় এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সফলতা আসে। এরপর দ্বিতীয়টির কাজ শুরু হয় এবং গ্রাউন্ড স্টেশনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। সাবমেরিনগুলোতে সেমি অটোনোমাস ফাংশনালিটি রয়েছে। পানির নিচে থেকে হাই ডেভিনেলাইফ ভিডিও লাইভ গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠাতে পারে। বিভিন্ন ধরনের সেন্সর ইন্টারফেইস যোগ করার পর এটি থেকে পানির নিচের বিভিন্ন গবেষণা এবং অনুসন্ধানের কাজ করা যাবে।

গ্রাউন্ড স্টেশন সফটওয়্যার হাতের ইশারার মাধ্যমে সাবমেরিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ভাষার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের কাজ এখনও চলছে। এছাড়াও থাকবে ফেইলসেইফ, থ্রাস্টার প্রোটেকশনসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা।

তথ্যসূত্র : বাংলানিউজ২৪.কম

(ওএস/অ/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪)