গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে শিশু গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতনের পর বন্দি করে রাখার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শহরের উত্তর ছায়াবিথির এলাকার ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম তরুন (৩৪) ও তার স্ত্রী বদরুন্নাহার ফাতেমা লিজা (২৫)। এ ঘটনায় গৃহকর্মী ইয়াসমিন আক্তার ময়না (১২) বাদি হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেছেন।

পুলিশ জানায়, ময়না তিন মাস আগে মাসিক ৮’শ টাকা বেতনে শহরের উত্তর ছায়াবিথির এফ/২২৫ নং বাসার মালিক তৌহিদুল ইসলাম তরুনের বাসায় কাজ নেয়। কয়েকদিন পর থেকে স্বামী-স্ত্রী মিলে ময়নাকে কারনে অকারনে শারিরিক নির্যাতন শুরু করেন। তার শরীর জুড়ে বর্বর নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।

গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে থালাবাসন পরিষ্কার না হওয়ার অজুহাতে গৃহকর্ত্রী লিজা ময়নাকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে। কান্নাকাটি করায় দুপুরে লিজার স্বামী ও তার চাচাত ভাই মামুন চুলের মুঠি ধরে আবারো কিলঘুষি ও লাথি মেরে গুরুতর আহত করে। ঘটনা কাউকে জানালে হত্যা করে লাশ গুমের ভয় দেখায় তারা। পরদিন বৃহস্পতিবার বাড়ি চলে যেতে চাইলে ওই তিনজন মিলে ষ্টিলের পাইপ দিয়ে ময়নার পুরো শরীরে আঘাত করে মারাত্বক জখম এবং মাথা ফাটিয়ে দেয়। ষ্টীলের চিকন তার গরম তরে আঙ্গুলের নখের নিচে প্রবেশ করায় এবং রান্নার লোহার খুন্তি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছেকা দেয়। পরে চুরির অপবাদ দিয়ে খাবার না দিয়ে ঘরে বন্দি করে রাখে।

পাশের বাসার লোকজন থানায় খবর দিলে শুক্রবার রাতে পুলিশ ময়নাকে উদ্ধার এবং স্বামী-স্ত্রীকে আটক করে। এ ঘটনায় রাতেই ময়না বাদি হয়ে মামলা করলে পুলিশ লিজা ও তার স্বামীকে শনিবার বিকেলে আদালতে পাঠায়। আদালত তাদের জামিন না দিয়ে জেলা হাজতে পাঠায়।

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, ময়না ময়মনসিংহের নান্দাইলের জলবান্ধা গ্রামের রফিকুল ইসলাম রবির মেয়ে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন। ময়নার মা ঢাকায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। গাজীপুরে তার নিকটজন না থাকায় আদালতের মাধ্যমে তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ওখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

(এসএএস/এটিঅার/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪)