বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া বাজারের পাশের খালে বালু কাটা ড্রেজার মেশিন বসানোয় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ছোট্ট এ খাল থেকে বালু উত্তোলন করা হলে বাজারটিসহ খালের ওপর অবস্থিত ব্রীজ, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও  বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি হুমকরি মুখে পড়বে। ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের মাঠ ভরাট করার উদ্দেশে ওই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম মুন্সী কয়েকদিন আগে ড্রেজার মেশিনটি ওই খালে স্থাপন করেন।

গত ৬ ডিসেম্বর বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা খাল থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম মুন্সীকে অনুরোধ জানায়। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় স্থানীয়রা বালুর পাইপ সরিয়ে ফেলেন। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়। এঘটনাকে কেন্দ্র করে পরের দিন ৭ ডিসেম্বর শামীম মুন্সী বাদি হয়ে স্থানীয় শাহ আলী হাওলাদার, মইনুল ইসলাম টিপু, মহিম আকন, খলিলুর রহমান বেপারী ও মানুম বেপারীর নামে শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শামীম মুন্সী ওই স্থান থেকে ড্রেজার মেশিনটি সরিয়ে না নেওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বালু কাটা শুরু করলে ওই এলাকায় বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত সোমবার বিকেলে সরেজমিন আমড়াগাছিয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজার, সড়ক, ব্রীজ ও বসতবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশ থেকে বহমান ছোট্ট খালে ড্রেজার মেশিনটি বসানো রয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ী নাঈম ভ্যারাইট স্টোরের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, খাল থেকে বালু উত্তোলন করা হলে বাজারের মারাত্মক ক্ষতি হবে। বাজারটি ডেবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাজারের পল্লী চিকিৎসক অরুণ কুমার রায় বলেন, বালু উত্তোলন করা হলে ধানসাগর ইউনিয়নের প্রষিদ্ধ ও প্রাচীন এবাজারটির অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাবে। বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবুল কালাম তালুকদার বলেন, ড্রেজার মেশিনটি আমার বাড়ি পাশে বসানো হয়েছে। এতে বাড়িঘরের মারাত্মক ক্ষতি হবে। ধানসাগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবুল আকন, আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন ও সাহেব আলী বলেন, খালের যে স্থানে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে, সেখান থেকে বাবু উত্তোলন করা হলে বাজারসহ আঞ্চলিক মহাসড়ক ও খালে অবস্থিত ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়বে। ধ্বসে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থাপনা। ভভিষ্যত ক্ষতির কথা ভেবে বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাররা বালু কাটতে বাধা দেয়। কিন্তু শামীম মুন্সী তাতে কোনো কর্ণপাত না করে উল্টো স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার ক্ষতির কথা না ভেবে তিনি নিজের সার্থের কথা ভাবছেন। যা মোটেই কাম্য নয়।

এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম মুন্সী বলেন, সরকারি প্রকল্পের জন্য খালে ড্রেজার বসানো হয়েছে। স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় আপাতত উত্তোল কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রসাশনের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৪)