সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বীরশ্রেষ্ঠ মো. শহীদ রুহুল আমিনের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে।

বুধবার সকাল ১১ টায় উপজেলার নয় নম্বর দেওটি ইউনিয়নের রুহুল আমিন নগরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃীতি যাদুঘরে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. রহিমা বেগমের সভাপতীত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বদরে মুনির ফেরদৌস।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সোনাইমুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক কামাল, সাবেক চেয়ারম্যান ও নান্দিয়াপাড়া বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন ডিগ্রি কলেজ ব্যবস্থাপনা পরিষদ সভাপতি আ.ফ.ম বাবুল (বাবু), নোয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন, সোনাইমুড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার গোলাম মাওলা, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের জ্যেষ্ঠ কন্যা নুরজাহান বেগম নারগিছ, নান্দিয়াপাড়া শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মিজানুর রহমান, বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবুতাহর নান্দিয়াপাড়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক আলহাজ্ব মো. ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের কবরটি খুলনা থেকে তার নিজভূমি সোনাইমুড়ীতে স্থানান্তর করার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের উষালগ্নে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর মংলা বন্দর থেকে নৌ বাহিনীর জাহাজ রণতরী ”পলাশ” যোগে খুলনার উদ্ধেশ্যে রওয়ানা দিলে সুন্দর বন সংলগ্ন এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর বিমান হামলায় তিনি শহীদ হন। সে সময় তিনি জাহাজের ইঞ্জিন আটিপিশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শত্রু বাহিনীর গোলার আঘাতে জাহাজে আগুন ধরে গেলেও তিনি দৃড়তার সাথে জাহাজ রক্ষা ও শত্রু বাহিনীকে পরাস্ত করতে মরিয়া হয়ে প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় পাক হানাদাদের গোলার আঘাতে তিনি প্রাণ হারান।

জেলার সাবক বেগমগজ্ঞ বর্তমান সোনাইমুড়ী উপজেলার বাগপাছড়া বর্তমান রুহুল আমিন নগর গ্রামে ১৯৩৪ সালে আজহর মিয়ার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৪৯ সালে মেট্রিক পাশ করে ১৯৫৩ সালে তদান্তিন পাকিস্তানী নৌবাহীনিতে নাবিক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে কিছুদিন তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে তিনি কর্মস্থল চট্টগ্রাম নৌঘাটি পিএনএস কুমিল্লা ত্যাগ করে গ্রামে ফিরে মে মাসে ছাত্র, যুবক ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সেনা বাহীনির সদস্যদের একত্রিত করে মুক্তিবাহীনির সেক্টর-৩ হেড কোয়াটারে সেক্টর কমান্ডার শফি উল্যার নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

(এনএইচ/এটিআর/ডিসেম্বর ১০, ২০১৪)