বাগেরহাট প্রতিনিধি : মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী, পাঠাগার ও ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম দীর্ঘ ২যুগেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ আছে। সামাজিক ও জনগুরুত্বপূর্ণ এই  প্রতিষ্ঠান ৩টি এখন অস্তিত্ব হারাবার অপেক্ষায়। 

সরকারি বেসরকারি কোন দিকেরই নজরদারী নেই এই প্রতিষ্ঠনগুলোর অস্তিত্ব ও গুরুত্বের বিষয়ে। ফলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন, ক্রীড়াঙ্গন ও পাঠাগার ভিত্তিক জ্ঞান চর্চায় ভয়াবহ আকারে ভাটা পড়েছে। যুব সমাজ, নতুন প্রজন্ম তথা শিশু কিশোরদের কাছে ওই ৩টি নামের সাথে কোন পরিচয় নেই। এ সবের ফসল হিসেবে বেড়েছে মাদকের বাজার, ব্যবহার। বেড়েছে মাদক সেবী, মাদক ব্যাবসায়ী, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজের সংখ্যা। ঘটছে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি, অকাল মৃত্যু। বাড়ছে পাগল, মস্তিস্ক বিকৃত ও বখাটে যুবকের সংখ্যা। ক্রীড়ামোদী, সংস্কৃতিমনা লোকজন ও জ্ঞান পিপাসুরা ডুবছে হতাশার মধ্যে।

উপজেলা প্রশাসন ভবন সংলগ্ন একটি কক্ষে শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে চলতো। একটি সাইনবোর্ড এখনো ঝুলছে সেখানে। কিন্তু নেই কোন কার্যক্রম। লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রপাতি অবহেলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৯৯০ সালে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়। দু’বছরের মাথায় হঠাৎ করে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তৎকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন ফারুকী। বন্ধ হয়ে যায় সকল কার্যক্রম। এর পরে আর কেউ এটি চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করেনি।

একাডেমীর সাবেক শিক্ষক স্বপন কর্মকার জানান, প্রায় দু’যুগ ধরে শিল্পকলা একাডেমীর সকল কার্যক্রম বন্ধ রায়েছে। ফলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন বিধ্বস্ত বলা যায়। সংগীত চর্চায় আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনেক কিন্তু তাদের প্রতিভা বিকাশে ক্ষেত্র নেই।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. লিয়াকত আলী খান জানান, শিল্পকলা একাডেমীটি চালু করার বিষয়ে একাধিকবার সমন্বয় সভায় নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা সত্ত্বেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।


একইভাবে সবার চোখের সামনেই পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে উপজেলা পাঠাগার ও ক্রীড়া সংস্থা। এ প্রতিষ্ঠান দুটিরও রয়েছে নিজস্ব স্থান ও বেশ টাকার মালামাল। কিন্তু তদারকীর অভাবে নষ্ট হচ্ছে পাঠাগারের কয়েক লক্ষ টাকার বই ও আসবাবপত্র। ক্রীড়া সংস্থার অবশিষ্ট নেই কিছুই। এক সময় কার্যক্রম চালানো হতো ষ্টেডিয়াম ভবনে। সে ভবনটিও পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ১১, ২০১৪)