লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : গৃহবধু হাছিনা বেগমের দুই ছেলের বয়স যখন ৪ ও ৬ বছর তখনই ক্যান্সার রোগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় স্বামী দিনমজুর বিল্লাল হোসেন। মৃত্যুর সময় স্ত্রী ও ছেলেদের জন্য বসতভিটাটাও রেখে যেতে পারেনি বিল্লাল। হাছিনা বেগমের বাবার বাড়ির অবস্থাও খুবই খারাপ ছিলো।

এতে ছেলেদের নিয়ে এক বেলা খেলে অন্য বেলা তাদের থাকতে হয় উপোষ। ছেলেদের এমন কষ্ট দেখে দুই বেলা খাবার দিতে নিজেই কাজে নামেন অন্যরে বাড়িতে। কয়েক মাস পরে ছোটছেলে রিয়াদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা না দিতে পারায় দুই পা’ই কিছুটা অচল হয়ে পড়ে। এতে আরও দুশ্চিন্তায় পড়েন হাছিনা বেগম। একদিকে ছেলের চিকিৎসার খরচ। অন্যদিকে সংসারের অভাব-অনটন মিটাতে গিয়ে চিকিৎসার অভাবে ছোট ছেলে হয়ে গেল শারীরিক প্রতিবন্ধী।

রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ এলাকার হাছিনা বেগমকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের শেখ বাড়ির বিল্লালের সাথে বিয়ে দেয়।

প্রতিবন্ধী রিয়াদের মা হাছিনা বেগম জানান, রিয়াদ প্রতিবন্ধী ছিলোনা। ‘অর্থ সংকট মাথায় নিয়ে প্রতিদিন ভোরে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবারে রোজগার করার মত কেউ ছিলো না। তিনি নিজেই অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। চিকিৎসার অভাবে ছোট ছেলে রিয়াদ শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। এখন প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করলে বিরয়াদ সুস্থ হবেন। খাবারের জন্য মানুষের বাড়িতে কাজ করে এসে সন্তানের সেবা যত্ন নিতে গিয়ে ৫ লাখ টাকা তো দূরের কথা ৫’শ টাকা রোজগার করতে পারেরনি তিনি। এভাবে ১২ বছর পার করার পর এখন আর অন্যদের বাড়িতে কাজ করতেও পারেন না।

হাছিনা বেগম আরও বলেন, কাজ করতে না পারায় বর্তমানে অভাবই তাদের নিত্য সঙ্গী। অর্ধাহারে-অনাহারে তাদের দিন কাটে। সরকার ও সমাজের বিত্তবানরা সুদৃষ্টি দিলেই তাদের পরিবারটি বাঁচবে। টাকার জন্য ছেলের চিকিৎসা অনিশ্চয়তা হওয়ায় এখন দুই বেলা খেয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন তার। আর এই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে হাছিনা বেগমের।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, হাছিনা বেগমের ছোট ছেলে প্রতিবন্ধি হওয়ায়- পরিবারটি চরম অর্থ সংকটে ভুগছে কথাটি সত্য। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ আসলে তাদের পরিবারের বিষয়টি আমরা পুনরায় বিবেচনা করবো।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- মো: হেদায়েত উল্যা মিঝি, সঞ্চয়ী হিসাব নং ৩৫১৮, সোনালী ব্যাংক, হায়দরগঞ্জ শাখা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, মোবাইল : ০১৭১৬৭৮৫৩৪০।)।

(এমআরএস/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৪)