বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনের শ্যালা নদীসহ আশপাশের বিস্তৃীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন কালো তেলের আস্তরণ। সুন্দরবনকে বাঁচাতে ভাসমান এসব তেল অপসারণের কাজ চলছে।

শনিবার ভোর থেকে অর্ধশতাধিক ট্রলার ও নৌকা যোগে স্থানীয়দের নিয়ে বন ও পরিবেশ বিভাগ ও মংলা বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তেল অপসারণের কাজ করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত অপসারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার দুইশ লিটার তেল। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশুরা নেট জাল এবং ফোম দিয়ে তেল সংগ্রহের এ প্রতিযোগিতায় নামে।

তেলবাহী ট্যাংকার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ ডুবে শ্যালা নদীসহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে। তেলের কারণে নদীতে মাছের দেখা নেই। জাল নষ্ট হয়ে যাওয়া ও মাছ না থাকায় জেলেরা এখন বেকার। তবে অলস সময় না কাটিয়ে বেকার জেলেরা সুন্দরবন রক্ষায় নেমে পড়েছে তেল সংগ্রহে।
এদিকে ফার্নেস অয়েলের কারণে পরিবেশে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মরতে শুরু করেছে ছোট ছোট মাছ, কাঁকড়া, গুইসাপসহ জলজ প্রাণী।

এদিকে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ৯ সদসের তদন্ত কমিটি সুন্দরবনের শেলা নদী পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. নুরুল করিম জানান, গবেষণা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে এবং ১৮ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

এছাড়া তেল নষ্ট করতে আসা জাহাজ কাণ্ডারি থেকে যে তরল রাসায়নিক পদার্থ ছিটানো হবে তাতে পরিবেশের ক্ষতি হবে কিনা যাচাইয়ে বুয়েটে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোরে শ্যালা নদীর মৃগামারী (মংলা) এলাকায় তলা ফেটে একটি তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে যায়। এতে জাহাজ থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ায় বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন ও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র চরম হুমকির মুখে পড়ে।

(ওএস/এইচআর/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪)