মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার প্রায় ৬১টি ইটভাটা রয়েছে, প্রবাসী অধ্যুষিত এ জেলায় পাকা বাড়ী, বিল্ডিং কিংবা অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ইটের বিকল্প নেই কিন্তু ইট প্রস্তুতের প্রধান জ্বালানী কয়লা আমদানী দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার কারণে এ শিল্পটির সাথে সংশ্লিষ্ট মালিকরা এখন চরম লকশানের মুখে। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন ইট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ঘুড়ে দেখা গেছে শ্রমিকরা প্রতি দিনই হাজার হাজার কাঁচা ইট প্রস্তুত করে সারি বদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখছেন শ্রমিকরা তবে প্রধান জ্বালানী পণ্য কয়লা আমদানী সম্পূর্ন বন্ধ থাকায় ইটের স্থুপ বাড়ছে সমপূর্ন প্রস্তুত করে ইট তুলা সম্ভব হচ্ছেনা আর এ কারণে শ্রমিকদের পাওনা দিতে হিমশীম খেতে হচ্ছে মালিকদের।

সদর উপজেলার বড়মান গ্রামে অবস্থিত মেসার্স কালাম ব্রিকস্ এর সত্ত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ জানান কয়লা আমদানী বন্ধ থাকার একমাত্র কারণ হলো সিলেটের জাফলং-তামাবিল রোড হয়ে ভারত থেকে যে কয়লা তারা আমদানী করতেন সেটি এখন রাজ্য সরকার বন্ধ করে দিয়েছে এটি চালু হলে আবার পুনরায় আমদানী করা যাবে তবে কবে চালু হবে তা এখন বলা যাচ্ছেনা, প্রায় ৩ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তুলেছেন মেসার্স কালাম ব্রিকস নামক ইট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি, তিনি বলেন আমার এখানে প্রায় ৩০০'শ শ্রমিক কাজ করে এ জন্য প্রতিদিন শ্রমিকদের মজুরী বাবত একলক্ষ টাকা দিতে হয়, প্রতি বছর ৬০ লক্ষ ইট প্রস্তুতের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করে শুরু হয় আমার এখানে ইট প্রস্ততের কাজ কিন্তু গত কয়েকদিনে প্রয় ১৫ লক্ষ কাঁচা ইট প্রস্তুত করে রেখেছি তবে কয়লা না থাকার কারনে এই ইট গুলো সম্পূর্ন প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছেনা, আর এ কারণে শ্রমিকদের পাওনা ও দিতে পারছিনা তাই এখন সাময়িক সময়ের জন্য শ্রমিকদের প্রাপ্ত মজুরী দিয়ে বিদায় করা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছিনা।তিনি আরো জানান সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পরিবেশবাদীরা পরিবেশ দূষনের দায়ে রাজ্যেও আদালতে একটি রিট দায়েরের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার বানংলাদেশে কয়লা রফ্তানী বন্ধ করে দেয় । বাংলাদেশের একমাত্র কয়লা উৎপাদন হয় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আর এটি দেশের বাজারে কয়লার যে চাহিদা রয়েছে তার মাত্র দশ ভাগ পূরণ করে বাকি নব্বই ভাগ কয়লা ভারত সহ অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল যে কারণে এখন ইট মালিকরা বেশী দামেও কয়লা পাচ্ছেন না আর না পাওয়ার কারণে বিকল্প জ্বালানী হিসেবে বেশী দামে কাটের লাকড়ি ক্রয় করতে হচ্ছে।

(এমএকে/পি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪)