নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন নিহতের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির ডাকে রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।হরতালের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চালাচল বন্ধ রয়েছে।

অন্যান্য হরতালের সময় সড়ক পথে যানচলাচল বন্ধ থাকলেও সাধারণ ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু আজকের হরতালে সকাল থেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরাও ধর্মঘট পালন করছে। গতকাল শনিবার সিটি করপোরেশন স্টাফরা দুই দিনের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাত খুনের প্রতিবাদে।

সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় একটি বাস ভাংচুর করা হয়।

এদিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সমাবেশ করছে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই হরতালে সমর্থন দিয়েছে। হরতালের সমর্থনে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শহরে একটি মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রেসক্লাবের সামনে একটি সমাবেশ করেন আইনজীবীরা। সমাবেশে আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, সাত খুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করছে।

হরতালের সমর্থনে আজ সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আইনজীবীদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

বিএনপি, সিপিবি, বাসদ, ন্যাপ, গণসংহতি আন্দোলন, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই হরতালে সমর্থন দিয়েছে।

হরতালের সমর্থনে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শহরে একটি মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাতজনের হত্যার বিচারের দাবিতে রবিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করছেন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে লিংক রোড ধরে ঢাকায় যাওয়ার পথে অপহূত হন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং তাঁর চার সহযোগী। প্রায় একই সময়ে একই সড়ক থেকে গাড়িচালকসহ অপহৃত হন আইনজীবী চন্দন সরকার। তিন দিন পর গত বুধবার একে একে ছয়জনের এবং পরদিন আরেকজনের লাশ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে।

(ওএস/এটি/মে ০৪, ২০১৪)