বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালের আকাশ পথে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই ফের চালু হচ্ছে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। এর আগে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী গত আগস্টের মধ্যে বরিশালসহ দেশের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু উড়োজাহাজ সংগ্রহে নানা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সপ্তম দফার দর প্রস্তাবনুযায়ী ৭২ আসনের দু’টি কানাডিয়ান ‘ড্যাস-৮ টার্বে প্রপ’ উড়োজাহাজ ড্রই লিজে সংগ্রহ করা হচ্ছে। আফ্রিকান ‘কাবো এয়ারলাইন্স’ থেকে এসব উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনা হবে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে উড়োজাহাজ দু’টি ঢাকায় এসে পৌঁছার কথা থাকলেও তা কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশের আকাশে আবার জাতীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজের ডানা মেলার বিষয়টি পিছিয়ে ফেব্র“য়ারির প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল একটি মহল। সূত্রমতে, বিমান কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বরিশাল, যশোর, রাজশাহী ও সৈয়দপুরে সেলস অফিসের জন্য ভাড়া বাড়ি খুঁজতে শুরু করেছে। বিক্রয় ও বিপণন পরিদফতরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতারা এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বরিশাল সফর করেছেন।

সূত্রমতে, ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরেই ঢাকা-বরিশাল-যশোর রুটসহ রাজধানীর সাথে রাজশাহী ও সৈয়দপুর রুটের জাতীয় পাতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় বিমানের সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে কথিত লোকসানের হাত থেকে রক্ষার নামে তৎকালীন সরকার এ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার পেছনে কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছিলোনা। ওইসময় শুধু চট্টগ্রাম ও সিলেটবাসীর জন্য ওই দু’টি সেক্টরে বিমান ফ্লাইট চালু রাখে সেনা সমর্থিত সরকার। বিমানের ফ্লাইট বন্ধে সাধারণ মানুষ চরম ক্ষুব্ধ হলেও জরুরি অবস্থার কারনে কেউ কথা বলেননি। অথচ ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই শুধু বরিশাল সেক্টরে বিমানের রাজস্ব আয় ছিল লক্ষ্যমাত্রার ২২৩%। বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন নেগাবান বলেন, কোনো মানুষ এ যুগে বিমানে ওঠার জন্য ঢাকায় যাবে না। ঢাকা যাওয়ার জন্যই বিমানকে ব্যবহার করবে। সুতরাং সে বিষয়টিকে বিবেচনা করেই তিনি বরিশাল সেক্টরে বিমানের ফ্লাইট রুট ও সময়সূচী নির্ধারনের দাবি করেন। এছাড়াও তিনি আগের মতো ঢাকা-বরিশাল-যশোর-ঢাকা এবং ঢাকা-যশোর-বরিশাল রুটে বিমান ফ্লাইট চালুর দাবি করেন। পাশাপাশি বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরত্বের বিমানবন্দরে বিমান ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রীদের যাতায়াতের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যও তিনি জোর দাবি করেন।

উল্লেখ্য, প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশালের রহমতপুর এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণ শেষে ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বরিশাল বিমানবন্দর ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান পরিসেবা চালু করেছিলো। বর্তমান বিমানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকাবস্থায় বরিশাল বিমানবন্দর নির্মাণ ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ফ্লাইট চালুর লক্ষ্যে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। বরিশালে বিমান ফ্লাইট তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বপ্ন।

(টিবি/পি/ডিসেম্বর ১৪, ২০১৪)