শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ী নাজমুল স্মৃতি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলামের অনৈতিক কাজের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ওই কলেজের ছাত্ররা। ৪ মে রবিবার সকালে ক্লাস, পরীক্ষা বর্জন করে দুপুর সাড়ে ১২ ট র্পযন্ত সড়ক অবরোধ ও একাডেমিক ভবনের দরজা জানালা ভাংচুর করে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নাজমুল স্মৃতি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম কলেজ একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে অবস্থান করার সুবাদে মাঝে মাঝেই বাইরে থেকে নারী নিয়ে এসে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। প্রথম দিকে এটাকে কেউ সন্দেহের চোখে দেখতো না। কিন্তু শনিবার অধ্যক্ষের সঙ্গে জামালপুরের এক মেয়েকে কলেজ ক্যাম্পাসে অসংলগ্ন চলাফেরা দেখে ছাত্রদের সন্দেহ হয়। পরে কয়েকজন ছাত্র মেয়েটিকে চ্যালেঞ্জ করলে ঘটনাটি দ্রুত জানা জানি হয়ে যায়। এ ঘটনার রেশ ধরে রবিবার সকাল থেকেই ছাত্ররা অধ্যক্ষের এ অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে। এক পর্যায়ে তারা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে স্লোগান দিয়ে কলেজের সামনের রাস্তায় আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং কলেজ ভবনের দরজা-জানালা ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মাইক লাগিয়ে মহাসড়কে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিয়ে অসারণের দাবি জানায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নের্তৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বেশ কিছুদিন যাবত বিজ্ঞান ভবনের তৃতীয় তলায় রেস্টরুম বানিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে তাদের (শিক্ষার্থীদের) কাছ থেকে জরিমানা আদায় এবং অশালীন আচরণ করে আসছেন। তাই তারা অধ্যক্ষের শাস্তি দাবি করে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
ছাত্র বিক্ষোভ মুখে কলেজ অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম কলেজের বাইরে অবস্থান করতে থাকেন। এ ব্যাপারে কলেজের উপাধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঘটনাটি কলেজ গভর্নিং বডি’কে (জিবি) জানিয়েছি। তারা বিষয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোকছেদুর রহমান লেবু বলেন, নাজুমল স্মৃতি কলেজের ছাত্র বিক্ষোভ পরিস্থিতি ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে ঘটনাটি তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে, অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মূলত: কলেজ পোশাক না পড়ে আসার কারণে গতকাল শনিবার ৮৫ জন শিক্ষার্থীকে একশ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এটাকেই হয়তো কোন কুচক্রীমহল ক্ষোভ হিসেবে নিয়ে আমার উপর মিথ্যা দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। কলেজ ক্যাম্পাসে সেই তথাকথিত মেয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়েটি কলেজে একটি সেমিনার সুপারভাইজার পদে চাকুরির জন্য এসেছিল।
(এইচবি/এএস/মে ০৪, ২০১৪)